• হোম
  • একাডেমি
  • মাদরাসা
  • নবম-দশম শ্রেণি
  • প্রাক-ইসলামি পটভূমি ও রাসুল (স.) এর মক্কা জীবন
প্রাক-ইসলামি পটভূমি ও রাসুল (স.) এর মক্কা জীবন

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

প্রাক-ইসলামি পটভূমি ও রাসুল (স.) এর মক্কা জীবন

জাহেলিয়া যুগের ধর্মীয় অবস্থা

জাহেলিয়া যুগে আরবদের ধর্মীয় অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় ও অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল। আরবে তখন অধিকাংশ লোকই ছিল জড়বাদী পৌত্তলিক। তাদের ধর্ম ছিল পৌত্তলিকতা এবং বিশ্বাস ছিল আল্লাহর পরিবর্তে অদৃশ্য শক্তির কুহেলিকাপূর্ণ ভয়ভীতিতে। তারা বিভিন্ন জড়বস্তুর উপাসনা করত। চন্দ্র, সূর্য, তারকা এমনকি বৃক্ষ, প্রস্তরখণ্ড, কূপ, গুহাকে পবিত্র মনে করে তার পুজা করত। প্রকৃতি পূজা ছাড়াও তারা বিভিন্ন মূর্তির পূজা করত। মূর্তিগুলোর গঠন ও আকৃতি পূজারীদের ইচ্ছানুযায়ী তৈরি করা হতো। পৌত্তলিক আরবদের প্রত্যেক শহর বা অঞ্চলের নিজম দেবীর মধ্যে অন্যতম ছিল আল-লাত, আল-মানাহ এবং আল-উজ্জা। আল-লাত ছিল তায়েফের অধিবাসিদের দেবী, যা চারকোণা এক পাথর। কালো পাথরের তৈরি আল-মানাহ ভাগ্যের দেবী। এ দেবীর মন্দির ছিল মক্কা ও মদিনার মধ্যবর্তী কুদায়েদ স্থানে। মদিনার আউস ও খাজরাজ গোত্রের লোকেরা এ দেবীর জন্য বলি দিত এবং দেবীকে সম্মান করত। নাখলা নামক স্থানে অবস্থিত মক্কাবাসীদের অতি প্রিয় দেবী আল-উজ্জাকে কুরাইশগণ খুব শ্রদ্ধা করত।

আরবদেশে বিভিন্ন গোত্রের দেবদেবীর পূজার জন্য মন্দির ছিল। এমনকি পবিত্র কাবা গৃহেও ৩৬০ টি দেবদেবীর মূর্তি ছিল। কাবাঘরে রক্ষিত মূর্তিদের মধ্যে সবচেয়ে বড় মূর্তির বা দেবতার নাম ছিল হোবল। এটি মনুষ্যাকৃতি ছিল- এর পাশে ভাগ্য গণনার জন্য শর বা তীর রাখা হতো।

উপরিউক্ত দেব-দেবী ছাড়া আরবে আরও পাথরের দেব-দেবীর মূর্তি ছিল। এগুলোর কথা পবিত্র কুরআনে উল্লেখ রয়েছে। আরববাসীরা ধর্মীয় কুসংস্কার ও অনাচারে আচ্ছন্ন ছিল। তারা দেব-দেবীর উদ্দেশ্যে পশু ও নরবলি দিত। মন্ত্রতন্ত্র, যাদু টোনা, ভূত, প্রেত ও ভবিষ্যৎ বাণীতে তারা বিশ্বাসী ছিল।

এ যুগে আরবে পৌত্তলিক ছাড়া অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকও কিছু ছিল। এদের মধ্যে ছিল ইহুদী, খ্রিষ্টান ও হানাফী সম্প্রদায়ের লোক। ইহুদী ও খ্রিষ্টান ধর্মের লোকেরা আসমানী কিতাবের অধিকারী ও একেশ্বরবাদী বলে দাবী করত। কিন্তু ইহুদীদের বিশ্বজগতের স্রষ্টা ও নিয়ন্তা সম্বলের সঠিক ধারণা ছিল না। তারা বিশৃংখলা ও বৈষম্য সৃষ্টিকারী ছিল। অপরপক্ষে খ্রিস্টানরা ত্রিভুবাদে বিশ্বাসী ছিল। আরবে আর এক শ্রেণির বিশ্বাসী লোক ছিল। তারা পৌত্তলিকতার বিরোধী ছিল। এক সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তা এবং পরলোক সম্বন্ধে তাদের ধারণা ছিল। তারা সৎ জীবন যাপন ব্রত। ওয়ারাকা বিন নাওফেল, যায়েদ বিন আমর, আবু আনাস প্রমুখ এ সম্প্রদায়ভুক্ত ছিলেন। এ সম্প্রদায়ভুক্ত লোকের সংখ্যা এত অল্প ছিল যে তারা আরবদের উপরে তেমন প্রভাব বিস্তার করতে সমর্থ হয়নি।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ