- হোম
- একাডেমি
- মাদরাসা
- নবম-দশম শ্রেণি
- প্রাক-ইসলামি পটভূমি ও রাসুল (স.) এর মক্কা জীবন
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
প্রাক-ইসলামি পটভূমি ও রাসুল (স.) এর মক্কা জীবন
মহানবি (সা)-এর বংশ পরিচিতি
মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইবরাহীম (আ.) এর পুত্র ইসমাঈল (আ.) এর বংশের উত্তর পুরুষগণ কুরাইশ নামে খ্যাত। হযরত ইসমাঈল (আ.) এর বংশধর ফিহরের অপর নাম ছিল কুরাইশ। তাঁর নামানুসারে গোত্রের নাম রাখা হয় কুরাইশ। তাঁর বংশধরগণ কুরাইশ নামে পরিচিত। কুরাইশ শব্দের অর্থ সওদাগর। তৎকালে আরবের মধ্য কুরাইশগণ ব্যবসায়-বাণিজ্যে অন্যান্য গোত্র থেকে উন্নতি সাধন করেছিল ধর্মীয়, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে মক্কায় তাদের ছিল একচ্ছত্র প্রাধান্য। ফলে মক্কায় তাঁরা সম্মান ও প্রতিপত্তির অধিকারী হয়। ফিহর খ্রিষ্টীয় তৃতীয় শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি। তাঁরই উত্তর পুরুষ কুশাই খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতাব্দীতে মক্কা এবং হিজাযে প্রাধান্য বিস্তার করেন।
তিনি কাবাগৃহের সংস্কার এবং তীর্থ যাত্রীদের সেবা-যত্ন করায় প্রসিদ্ধি লাভ করেন। তিনি ধর্মীয় ও পার্থিব বিষয়ে আরবদের নেতা ছিলেন। ৪৮০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মৃত্যুবরণ করলে তাঁর পুত্র আবদুন্দার মক্কার নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব গ্রহণ করেন। আবদুদ্দারের মৃত্যুর পর আব্দুল মানাফ ক্ষমতা গ্রহণ করেন। তাঁর পুত্র আবদুদ্দারের পৌত্রগণ কাবা ঘরের রক্ষণাবেক্ষণ ও দারুণ নাদওয়া বা পরামর্শ সভাগৃহের তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব লাভ করেন। আব্দুস শামসের পর তাঁর ভাই হাশিম এবং তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর ভাই মুত্তালিব শাসনভার গ্রহণ করেন। মুত্তালিব বীরত্ব ও দানশীলতার জন্যে বিখ্যাত ছিলেন।
৫২০ খ্রিষ্টাব্দে দয়ালু ও দানশীল মুত্তালিবের মৃত্যুর পর তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র শায়বাকে মক্কার সর্বময় কর্তৃত্ব প্রদান করা হয়। এখানে উল্লেখ্য যে, শায়বাকে দয়ালু মুত্তালিবের ক্রীতদাস মনে করে তাঁর নাম দেয়া হয় আবদুল মুত্তালিব। ইসলামের ইতিহাসে তিনিই আবদুল মুত্তালিব নামে পরিচিত। তাঁর শাসনামলে ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে আবিসিনিয়ায় বাদশাহ আবরাহা মক্কা নগরী আক্রমণ করে। আবরাহা হাতির পিঠে আরোহণ করে মক্কায় যুদ্ধ যাত্রা করেন বলে এ বছরকে হস্তিবর্ষ বা 'আ-মূল ফিল ) عام الفيل ( বলা হয়। মহান আল্লাহর নির্দেশে একদল আবাবিল পাখি ছোট ছোট পাথর কনা নিক্ষেপ করে আবরাহার বাহিনীকে ধ্বংস করে দেয়। পবিত্র কুরআন শরীফের 'সূরা আল ফীলে' এ ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। আবদুল মুত্তালিব অপরিসীম কার্যক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। তিনি ৫৯ বছর বয়সে মক্কায় ক্ষমতাসীন থাকাকালে মৃত্যুবরণ করেন।
আবদুল মুত্তালিবের সন্তানদের মধ্যে ১২ জন পুত্র এবং ৬ কন্যা সন্তান ছিল। পুত্রগণের মধ্যে আবু তালেব, আব্বাস, হামজা এবং আব্দুল্লাহ ইসলামের ইতিহাসে প্রসিদ্ধি লাভ করেছেন। আব্বাস হলেন আব্বাসীয়া বংশের পূর্ব পুরুষ।
আবদুল মুত্তালিবের কনিষ্ঠ পুত্র আবদুল্লাহ ছিলেন বিশ্বনবি হযরত মুহাম্মাদ (সা)-এর পিতা। তিনি মদিনার বানু জোহরা গোত্রের নেতা আবদুল ওয়াহাবের কন্যা বিবি আমিনাকে বিয়ে করেন। বিবাহের কিছুদিন পর আবদুল্লাহর ব্যবসা উপলক্ষে সিরিয়া গমন করেন। কিন্তু বাণিজ্য থেকে ফেরার পথে মদিনার উপকণ্ঠে অসুস্থ হয়ে মাত্র ২৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। বিবি আমিনা তখন গর্ভবর্তী ছিলেন। আবদুল্লাহর মৃত্যুর পর হযরত মুহাম্মাদ (সা) জন্মগ্রহণ করেন।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ
