- হোম
- একাডেমি
- মাদরাসা
- নবম-দশম শ্রেণি
- প্রাক-ইসলামি পটভূমি ও রাসুল (স.) এর মক্কা জীবন
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
প্রাক-ইসলামি পটভূমি ও রাসুল (স.) এর মক্কা জীবন
হাজরে আসওয়াদ স্থাপন
মক্কার কাবাঘর পৃথিবীব্যাপী চির প্রসিদ্ধ। এর নাম বাইতুল্লাহ (بَيْتُ الله)। এ গৃহটি হযরত ইবরাহীম (আ.) এর সময় হতেই বিশ্বের সর্বপ্রধান এবাদত খানা রূপে পরিগণিত ছিল। মানুষ আল্লাহকে ভুলে গিয়ে জন্ম-কুসংস্কারের মোহে পড়ে এই পবিত্র গৃহে বন্ধু দেব-দেবীর মূর্তি স্থাপন করা সত্ত্বেও একে আল্লাহর ঘর হিসেবে বিশ্বাস করত। কাবা গৃহটি সংস্কারের প্রয়োজন দেখা দিলে কুরাইশ বংশের সকল গোত্র একত্রিত হয়ে নতুন করে কাবাগৃহ নিমার্ণ করতে সংকল্পবদ্ধ হয়। তাঁরা সকলে মিলে কাবা গৃহের নির্মাণ কার্য সমাপ্ত করেন। কিন্তু হাজরে আসওয়াদ বা কালো পাথরটি কে যথাস্থানে স্বাপন করবেন তা নিয়ে মহা বাক-বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়।
পাথরটির সাথে সামাজিক মর্যাদা ও বংশগত প্রাধান্যের বিষয় সম্পৃক্ত ছিল। প্রত্যেক গোত্রের লোকই দাবি করতে লাগল যে, তাঁরাই পাথরটি স্থাপনের একমাত্র অধিকারী। প্রথমে বচসা, অতঃপর তুমুল দ্বন্দ্ব কলহ শুরু হল। এভাবে চারদিন অতিবাহিত হয়ে গেল কিন্তু মীমাংসার কোন লক্ষণই দেখা গেল না। তখন আরবের চিরাচরিত প্রথানুসারে সকলে যুদ্ধের জন্যে প্রস্তুত হয়ে গেল।
যুদ্ধ যখন একেবারে অনিবার্য হয়ে পড়ল, তখন জ্ঞানবৃদ্ধ আবু উমাইয়া সকলকে আহবান করে বললেন, সিম্বর হও, স্থির হও, আমার কথা শোন। বৃদ্ধের গভীর মর্ম বেদনাপূর্ণ গন্ধীর আহ্বানে সকলে ফিরে দাঁড়াল। তখন তিনি সকলকে বুঝিয়ে বললেন এবং প্রস্তাব দিলেন: 'যে ব্যক্তি আগামীকাল সর্বপ্রথম কাবা গৃহে প্রবেশ করবে তিনিই এ বিবাদের ফয়সালা দেবেন। তিনি যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন সকলেই তা মেনে নেবে।' এ প্রস্তাবে সকলেই সম্মত হল। প্রথম আগন্তুক আগমনের প্রতীক্ষায় সকলেই উদগ্রীব রইলেন এবং কাবা ঘরের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করলেন।
এমন সময় শতকণ্ঠে আনন্দ রোল উঠল এইত আমাদের 'আল-আমীন' উপস্থিত। আমরা সকলেই তাঁর মীমাংসায় সম্মত। হযরত মুহাম্মাদ (সা.) তখন তাদের মুখ থেকে সকল ঘটনা শুনলেন এবং নিজের বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তিনি তাঁর সমাধান দিলেন। তিনি একখানা চাদর বিছিয়ে নিজে পাথরটি এর মধ্যস্থলে স্থাপন করেন এবং বিদ্যমান সকল গোত্রের প্রতিনিধিগণকে বললেন এবার আপনারা প্রত্যেকেই এর চাদরের এক এক প্রান্ত ধরে পাথরটিকে যথাস্থানে নিয়ে আসুন। সকলেই তা করলেন। তখন হযরত মুহাম্মাদ (সা.) পুনরায় পাথরটি নিজ হাতে তুলে যথাস্থানে বসালেন। তখন তাঁর বয়স হয়েছিল ৩৫ বছর।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ
