• হোম
  • একাডেমি
  • মাদরাসা
  • নবম-দশম শ্রেণি
  • প্রাক-ইসলামি পটভূমি ও রাসুল (স.) এর মক্কা জীবন
প্রাক-ইসলামি পটভূমি ও রাসুল (স.) এর মক্কা জীবন

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

প্রাক-ইসলামি পটভূমি ও রাসুল (স.) এর মক্কা জীবন

মহানবি (সা.)-এর প্রতি কুরআন নাযিলের পদ্ধতি

পবিত্র কুরআন ও হাদীসের ভাষ্যানুযায়ী জানা যায় যে, কুরআন মাজিদ হযরত জিবরাইল আমীন (আ) এর মাধ্যমে মহানবি (সা.)-এর কাছে অবতীর্ণ হয়। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন- 'এই কুরআন তো বিশ্ব প্রভুর নিকট থেকে অবতীর্ণ। বিশ্বস্ত ফেরেশতা একে নিয়ে অবতরণ করেছেন '(সুরা: শুআরা ১৯২-৯৩)। আল্লাহ পাক আরো বলেন- 'রুকুল কুদ্দুস তথা পবিত্র আত্মা ফেরেশতা জিবরাইল (আ) হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর প্রভুর নিকট হতে সঠিকভাবে এটা আনয়ন করেছেন।' (সুরা নাহল: ১০২)

প্রথম পর্যায়ে 'লাওহে মাহফুজ' থেকে সম্পূর্ণ কুরআন মজিদ একই সাথে নাফিল হল রমযান মাসের কদর রজনীতে পৃথিবী সংলগ্ন আসমানে তথা বাইতুল ইয্যাতে। এ মর্মে আল্লাহ বলেন- 'নিশ্চয়ই আমি কুরআনকে কদর রজনীতে নাযিল করেছি।' (সূরা কদর: ১)। মহানবি স্বয়ং বলেন- 'লাওহে মাহফুজ হতে কুরআন মজিদকে প্রথমে পৃথিবীর আকাশে বাইতুল ইযযাতে রাখা হয়।' হযরত ইবনে আব্বাস (রা) বলেন- 'ফসর রজনীতে সম্পূর্ণ কুরআন পৃথিবীর আকাশে এক সঙ্গে অবতীর্ণ হয়।' অতঃপর প্রয়োজনের প্রেক্ষাপটে তথা হতে ফেরেশতা জিবরাইল (আ)-এর মারফতে প্রকাশ্যে ওহি যোগে মহানবি (সা.)-এর প্রতি দুনিয়াতে অবতীর্ণ হয়। নবি জীবনের সুদীর্ঘ ২৩ বছরে মানব জাতির প্রয়োজনের তাকীদে অবস্থার ও ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কুরআনের আয়াত ও সূরা পর্যায়ক্রমিকভাবে অবর্তীর্ণ হয়। এটা অন্যান্য আসমানী কিতাবের মতো এক সঙ্গে সম্পূর্ণ নাযিল না হওয়ার তাৎপর্যও রয়েছে।

সর্বপ্রথম ৬১০ খ্রিষ্টাব্দে নবি কারিম (সা.)-এর ৪০ বছর বয়সে 'জাবালুন নূর' এর হেরা গুহায় লাইলাতুল কদর রজনীতে' সূরা আলাকের প্রথম পাঁচ আয়াত অবতীর্ণ হয়। তখন তিনি হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন অবস্থায় ছিলেন।

তারপর প্রায় ২৩ বছর পবিত্র কুরআনের সূরা ও আয়াতসমূহ খড়াকারে নাযিল হতে থাকে। অবস্থা, প্রয়োজন ও বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে মহানবি (সা)-এর ২৩ বছর নবুয়তি জীবনে কুরআন অবতরণ হতে থাকে। প্রথম দিকে আল্লাহর অস্তিত্ব, তাঁর একত্ববাদ, পরকালের নিশ্চয়তা ইত্যাদি বিষয়ক সূরা অবতীর্ণ হয়। অবশেষে হিজরতের পরে অবর্তীর্ণ সূরা গুলোতে সামাজিক, নৈতিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক আইন-কানুন ইত্যাদি ক্রমে ক্রমে নাযিল হয়েছিল। অবশেষে একাদশ হিজরির শেষ লগ্নে বিদায় হজ্জের সময় আরাফাতের ময়দানে সূরা মায়িদার এ আয়াত নাযিলের মাধ্যমে কুরআন নাযিল সমাপ্ত হয়।

'আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের জীবন বিধানের পরিপূর্ণতা দান করলাম। তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত পরিপূর্ণ করলাম। আর তোমাদের জন্য ইসলামকে জীবনব্যবস্থারূপে মনোনীত করলাম'। (সুরা মায়িদা: ৩)

ইসলাম পরিপূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা হওয়ার কারণে ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে ও পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে কুরআন খণ্ডাকারে সুদীর্ঘ ২৩ বছর ব্যাপী পর্যায়ক্রমে অবতীর্ণ হয়েছিল। কেননা ঐশীবাণী কুরআনকে আয়ত্ব করা, বিভিন্ন লোকের প্রশ্নের জবাব, উদ্ভূত পরিস্থিতির মোকাবিলা, কুরআনের প্রতিটি নির্দেশের উপর আমল করার সুবিধার্থে এবং সর্বোপরি কুরআনের যথাযথ মর্ম অনুধাবন করা সহজ নয়, সে কারণেই কুরআন দীর্ঘ তেইশ বছরে পর্যায়ক্রমে খণ্ডাকারে অবর্তীর্ণ হয়। আর তা সাথে সাথে যথাস্থানে লিপিবদ্ধ করে রাখা হয়। মহানবি (সা) সে আলোকে সমাজ বির্নিমাণ করেন এবং কুরআনের সকল বিধি-বিধান বাস্তবায়ন করেন।

এই কুরআনে ১১৪ টি সূরা, ৬২৩৬ টি আয়াত, ৭৭,৯৩৪ টি শব্দ এবং ৩,২৩,৬২১ টি অক্ষর আছে। মক্কায় ৯২ টি সূরা এবং মদিনায় ২২ টি সূরা অবর্তীর্ণ হয়। কুরআন শরীফ তার ভাব, ভাষা, অলংকার, উপমা, উৎপ্রেক্ষা, ছন্দ-মূর্ছনা, রচনা শৈলী, বিষয়বস্তুর অভিনব গ্রন্থনা, বাক্যের অনুপম বিন্যাস-দ্যোতনা সব ঘিরে এক অতুলনীয় ও অনুপম শাশ্বত কিভাব।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ