- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
- পাকিস্তানি আমলে বাংলা : ভাষা আন্দোলন ও এর গতিপ্রকৃতি
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
পাকিস্তানি আমলে বাংলা : ভাষা আন্দোলন ও এর গতিপ্রকৃতি
ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য (Significance of language movement)
বাঙালি জাতীয়তাবোধ জাগরণে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য অপরিসীম। আন্দোলন করে কিভাবে ন্যায্য অধিকার ছিনিয়ে আনতে হয় তার শিক্ষা দিয়েছে '১৯৫২'। নিম্নে ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য উল্লেখ করা হলো:
১। এ আন্দোলন শুধু ভাষা ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন হিসেবেই বিবেচিত হয় না, বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকাশের পথিকৃৎ হিসেবেও বিবেচিত হয়।
২। একুশের ভাষা আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে বাঙালিরা সর্বপ্রথম নিজেদের স্বতন্ত্র সত্তা ও অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠে।
৩। একুশে ফেব্রুয়ারি ছিল বাংলাদেশের প্রথম গণসচেতনতা এবং পরবর্তীকালে শাসকচক্রের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম বলিষ্ঠ পদক্ষেপ।
৪। ভাষা আন্দোলনের মধ্যে বাঙালিদের স্বাধিকার আন্দোলনের বীজ সুপ্ত ছিল।
৫। ১৯৫৬ ও ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দের সংবিধানে বাংলা ভাষা পাকিস্তানের অন্যতম ভাষার মর্যাদা লাভ করার পর থেকে এর উন্নয়নের জন্য বাংলা একাডেমি, বাংলা উন্নয়ন বোর্ড ইত্যাদি প্রতিষ্ঠিত হয়।
৬। পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকে পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র এঁটেছিল তা ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে রুখে দিয়েছিল বলেই পরবর্তীতে অন্যান্য অনেক ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা বাঙালিদের পক্ষে সম্ভব হয়।
৭। একুশের রক্তদানের ফলে যে জাতীয়তাবাদী চেতনা বিকশিত হয় তা থেকেই জন্ম নেয় একুশ দফার দাবি। একুশের প্রতীক 'একুশ দফা' প্রণয়ন করে প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী বাঙালি নেতৃবৃন্দ যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করে।
৮। ৫২ যে আন্দোলনের সূত্রপাত করেছিল ৭১-এর স্বাধিকার আদায়ের মধ্য দিয়ে তা সমাপ্তি রচিত হয়। ৫২ থেকে ৭১ পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে আন্দোলনের প্রেরণা যুগিয়েছিল ভাষা আন্দোলন। ভাষার জন্য জীবনদানের ইতিহাস বিশ্বে বিরল।
৯। মাতৃভাষা রক্ষার জন্য বাঙালিরা জীবন দিয়ে পৃথিবীর ইতিহাসে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে সে কারণেই জাতীয় সীমানা পেরিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার মর্যাদা লাভ করেছে।
১০। ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, মাতৃভাষার প্রতি মমত্ববোধ ও দায়িত্ববোধের প্রকৃত নিদর্শনের প্রতি সম্মান ও স্বীকৃতি জানাতে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে ইউনেস্কো।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ

