• হোম
  • স্কুল ১-১২
  • সাধারণ
  • একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি

ইসলামি শিক্ষা ও সংস্কৃতি || Islamic Education and Culture

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

ইসলামি শিক্ষা ও সংস্কৃতি || Islamic Education and Culture

রসায়নশাস্ত্রে মুসলিম মনীষীদের অবদান- Contributions of Muslim Scholars in Chemistry

বিজ্ঞানের অন্যতম মৌলিক শাখা হলো রসায়ন। বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার মতো রসায়নশাস্ত্রেও মুসলিম মনীষীদের অসামান্য অবদান রয়েছে। তাদের মধ্যে জাবির ইবনে হাইয়ান, আল কিন্দি, জুননুন মিসরি ও ইবনে আবদুল মালিক আল-কাসি প্রমুখের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

জাবির ইবনে হাইয়ান (৭২২-৮০৪ খ্রি.) সর্বপ্রথম রসায়নকে বিজ্ঞানের একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ শাখা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। তাকে 'আলকেমি' বা রসায়নশাস্ত্রের জনক বলা হয়। তিনি আরবের কুফায় একটি বিজ্ঞানাগার প্রতিষ্ঠা করে সেখানে বিভিন্ন রাসায়নিক গবেষণা পরিচালনা করেন। জাবির ইবনে হাইয়ান বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করেন। তিনি রসায়নশাস্ত্রের অন্যতম প্রধান দুটি সূত্র ভস্মীকরণ (Calcination) ও লঘুকরণ (Reduction) এর বিজ্ঞানসম্মত আলোচনা করেন। তরল পদার্থকে বাষ্পে পরিণত করার এবং বাষ্পকে তরল পদার্থে পরিণত করার পদ্ধতি তার জানা ছিল। জাবির ইবনে হাইয়ান পাতন, ঊর্ধ্বপাতন, পরিস্রবণ, দ্রবণ, গলন প্রভৃতি রাসায়নিক পদ্ধতির ব্যাপক উন্নতিসাধন করেন।

Oxidation বা ধাতুর সাথে অম্লজান মিশ্রণ এবং হিসাব নিরূপণের রাসায়নিক পদ্ধতি তার হাতেই পূর্ণতা পায়। জাবির ইবনে হাইয়ানের বড় কৃতিত্ব হলো তিনি রাসায়নিক সূত্র ও পদ্ধতির ব্যাবহারিক রূপ দেন। তিনি ধাতুর মানগত উন্নতিবিধান, স্টিল ও লোহা তৈরি, মারকাসাইট থেকে স্থায়ী লেখার কালি তৈরি, চামড়া ও কাপড় রং করা, কাপড়কে ওয়াটার প্রুফ করা ও লোহা সংরক্ষণের জন্য বার্নিস ব্যবহার করা, ম্যাঙ্গানিজ ডাই-অক্সাইড থেকে কাচ তৈরি করা, সোনালি অক্ষরে লেখার জন্য লৌহ পাইরিটসের ব্যবহার করা এবং এসিডের ঘনত্বের জন্য অম্লরস চোলাই করার পদ্ধতির সফল প্রয়োগ করেন।

সাইট্রিক এসিড, সিলভার নাইট্রেট, কিউপ্রিক ক্লোরাইড, এন্টিমনি, আর্সেনিক প্রভৃতি বিষয়ে তার প্রয়োজনীয় জ্ঞান ছিল। তিনি লবণ তৈরির একটি সফল ব্যাবহারিক পদ্ধতির উদ্ভাবন করেন। জাবির ইবনে হাইয়ান বিজ্ঞান বিষয়ে দু'হাজারের বেশি গ্রন্থ রচনা করেন। এর মধ্যে রসায়ন নিয়ে লেখা গ্রন্থ হলো ২৬৭টি। বর্তমানে তার রচনাসমগ্রকে কয়েকটি সংকলনে বিন্যস্ত করা হয়েছে। এ সংকলনের প্রত্যেকটিতে ৭০ থেকে ৫০০ পর্যন্ত গ্রন্থ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তার গ্রন্থগুলোর মধ্যে কিতাব আল-তাজমী, কিতাব আল-রাহমাহ্, আল-শারাকী প্রভৃতি অন্যতম।

রসায়নশাস্ত্রের ওপর গবেষণা করা প্রথম দিকের আরব মুসলিম বিজ্ঞানীদের মধ্যে জুনজুন মিসরি অন্যতম। তিনি রসায়নের বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে গবেষণা ও লেখালেখি করেন। তার লেখায় সোনা, রুপাসহ বিভিন্ন খনিজ পদার্থের বর্ণনা পাওয়া যায়। তিনি মিশরীয় সাংকেতিক বর্ণের মর্মার্থ বুঝতেন ।

ইবনে আবদুল মালিক আল কাসি রচিত 'আইনুস সানাহ ওয়া আইওয়ানুস সানাহ' (Essence of the Art and Aid of Worker) গ্রন্থটি রসায়নশাস্ত্রে একটি মূল্যবান সংযোজন। তিনি এ গ্রন্থে রসায়নের প্রত্যেক প্রয়োজনীয় বিষয়ের সহজ-সরল পন্থা সংক্ষিপ্তভাবে উল্লেখ করেছেন।

একক কাজ: রসায়নশাস্ত্রে যেসব মুসলিম মণীষী অবদান রেখেছেন শিক্ষার্থীরা তাদের একটি তালিকা প্রস্তুত করে শিক্ষককে দেখাবে।