• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি

পৌরনীতি ও সুশাসন পরিচিতি

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

পৌরনীতি ও সুশাসন পরিচিতি

সুশাসন | Good Governance

সুশাসন আধুনিক গণতান্ত্রিক ও সমাজকল্যাণমূলক রাষ্ট্রে বহুল প্রত্যাশিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ, প্রচেষ্টা যেমন রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে, তেমনি তা দেশের মানুষের অধিকারে পরিণত হয়েছে। কেননা মানুষ তাদের অধিকার আদায়, দাবিদাওয়া পূরণ ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য যুগ যুগ ধরে আন্দোলন করে আসছে। সেই ধারাবাহিকতায় আধুনিক গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যাপকভাবে প্রয়াস চালানো হচ্ছে। বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে সুশাসনের ধারণা জনপ্রিয়তা লাভ করে। দেশের জনগণের সন্তুষ্টিই সুশাসনের মানদণ্ড।

উনবিংশ শতাব্দীতে বিশ্বে গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থার অগ্রযাত্রার সাথে সাথে রাষ্ট্রের একটি অপরিহার্য অনুষঙ্গ হিসেবে সুশাসনের প্রসঙ্গটি জোরেশোরে উচ্চারিত হতে থাকে। জন লক, এডমন্ড ব্রক, মাইকেল ফুট প্রমুখ চিন্তাবিদগণ সুশাসন নিয়ে ব্যাপক গবেষণা করেছেন। তারা সামাজিকভাবে প্রত্যাশিত এক ধরনের যে শাসন ব্যবস্থার পক্ষে মত দিয়েছেন, তা নিশ্চিতভাবে সুশাসনেরই ইঙ্গিত প্রদান করেন। এ প্রসঙ্গে তারা আরও বলেন, সরকারের কর্মকাণ্ড যদি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাস্তবায়িত হয় তাকে সুশাসনের আওতায় ফেলা যায়।

সাম্প্রতিককালে বিশ্বব্যাংক দাতাগোষ্ঠীসহ পশ্চিমা দেশসমূহ সুশাসন সম্পর্কে তাদের দৃষ্টি ও মতামতের প্রতিফলন ঘটাচ্ছে নানাভাবে। যেসব রাষ্ট্রে রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল, যেখানে প্রশাসন দুর্নীতিমুক্ত, স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক, আইনের শাসন ও জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার অনেকটা সুরক্ষিত, সেসব দেশে তারা সাহায্য-সহযোগিতা প্রদানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। তারা মনে করেন, সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ধারা ও নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রতিষ্ঠায় প্রশাসনিক প্রশাস স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার কোনো বিকল্প নেই। আর এভাবেই রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে। 

সুশাসনের ধারণা (Concept of Good Governance)

সভ্যতার ক্রমবিকাশের সাথে এবং তথ্য প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সাথে সামঞ্জস্য রেখে রাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় ক্রমশ পরিবর্তন এসেছে। এরই ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রীয় শাসন কাঠামোর উন্নততর কৌশল বা পদ্ধতি হিসেবে সুশাসন প্রত্যয়টির সূচনা। তাই সুশাসন বা সুপরিচালন (Good Governance) প্রত্যয়টি বর্তমান বিশ্বায়নের (Globalization) যুগে একটি বহুল আলোচিত ধারণা (Concept) হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় শাসন কাঠামো জনগণের কল্যাণে ব্যবহারের জন্য বিগত শতকের নব্বই দশকের শুরুতে শাসন ব্যবস্থায় একটি নতুন ধারণা হিসেবে 'সুশাসন' কথাটির প্রচলন শুরু হয়।

সুশাসনকে কোনো একক ধারণার মাধ্যমে সংজ্ঞায়িত করা সম্ভব নয়। কেননা সুশাসন হলো একটি বহুমাত্রিক ধারণা। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, দাতা গোষ্ঠী সুশাসন ধারণাটির সংজ্ঞা বা ব্যাখ্যা প্রদান করেছে। ১৯৮৯ সালে বিশ্বব্যাংকের এক সমীক্ষায় সর্বপ্রথম 'সুশাসন' প্রত্যয়টি ব্যবহার করা হয়।

ইংরেজি Governance শব্দটির আগে Good প্রত্যয়টি যোগ করে Good Governance শব্দটির উদ্ভাবন করা হয়েছে। যার বাংলা প্রতিশব্দ সুশাসন। 'সু' অর্থ ভালো, শাসন অর্থ শাসন বা পরিচালনা, অর্থাৎ সুশাসন মানে ভালো শাসন বা কল্যাণমুখী শাসন। ব্যাপক অর্থে জনগণের কল্যাণ সাধনে যে শাসন ব্যবস্থা পরিচালিত হয় তাই সুশাসন।

সুশাসন হচ্ছে এমন একটি কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রতিফলন যেখানে শাসক ও শাসিতের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় থাকবে, স্বাধীন বিচার বিভাগ থাকবে, আইনের শাসন থাকবে, মানবাধিকারের নিশ্চয়তা থাকবে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে সকলের অংশগ্রহণ, মতামত ও পছন্দের স্বাধীনতা থাকবে এবং থাকবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা।

মারটিন মিনোগ সুশাসনের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন, "ব্যাপক অর্থে সুশাসন হচ্ছে কতিপয় উদ্যোগের সমষ্টি এবং একটি সংস্কার কৌশল যা সরকারকে অধিকতর গণতান্ত্রিক, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করতে সুশীল সমাজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে কার্যকর করে তোলে।"

ম্যাককরনী (Mac Corney) সুশাসনের একটি চমৎকার সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। তিনি বলেন, "সুশাসন হলো রাষ্ট্রের সাথে সুশীল সমাজের, সরকারের সাথে জনগণের এবং শাসকের সাথে শাসিতের সম্পর্ককে বোঝায়।" ("Good Governance is the relationship between civil society and the state, between government and governed, the ruler and ruled.")

ল্যান্ডেল মিল (Landell Mill) সুশাসন সম্পর্কে বলেন, "সুশাসন হলো এমন এক অন্তর্নিহিত ভাষা ও আচরণ কাঠামো যা উত্তম শাসনকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।" বিশ্বব্যাংক-এর মতে "সুশাসন এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে উন্নয়নের জন্য দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সম্পদসমূহের ব্যবস্থাপনায় ক্ষমতার প্রয়োগ করা হয়।" ("Good Governance is the manner in which power is exercised in managemenet of a countrys economic and social resources of development.")

অবসরপ্রাপ্ত ব্রিটিশ স্থায়ী সচিব Sir Kenneth Stowe সুশাসনের নির্দেশক হিসেবে কতকগুলো বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। যেমন-

  • রাজনৈতিক স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা এবং একটি অবাধ নির্বাচিত আইনসভা;
  • ব্যক্তিসত্তার অধিকার সংরক্ষণে সংবিধান এবং বিচার বিভাগের ক্ষমতা;
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার মাধ্যমে সমাজের সার্বিক উন্নয়ন;
  • স্থিতিশীল মুদ্রা ব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ এবং
  • একটি স্বাধীন নির্বাচিত আইনসভার কাছে নির্বাহী কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতা।

উপরের সংজ্ঞাগুলো বিশ্লেষণ করে বলা যায় যে, সরকারের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, দায়িত্বশীলতা এবং জনগণের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে, জনগণের কল্যাণে শাসনকার্য পরিচালনাই হচ্ছে সুশাসন। সুশাসন সেই শাসনব্যবস্থা যেখানে শাসক-শাসিতের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকবে। স্বাধীন বিচার বিভাগ ও জনগণের পছন্দের স্বাধীনতা থাকবে।

সুশাসনের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Good Governance)

সুশাসন জনপ্রশাসনের জন্য একটি নবতর ধারণা ও সংযোজন। বর্তমান বিশ্বে এই প্রত্যয়টি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। জাতিসংঘ (Economic and social commission for Asia and the Pacific) সুশাসনের প্রধান ১৫টি বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করেছে। নিম্নে সুশাসনের বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা করা হলো:

১. নাগরিকের অংশগ্রহণ (Participation): সুশাসনের প্রথম ও প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো সকল নাগরিকের অংশগ্রহণ। যেকোনো কর্মসূচিকে সফল করে তোলার জন্য সকল নাগরিকের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। এখানে অংশগ্রহণ বলতে নীতি প্রণয়ন বা নীতি নির্ধারণে এবং বাস্তবায়নে যতদূর সম্ভব অধিক নাগরিককে সম্পৃক্ত করাকে বোঝায়।

২. আইনের শাসন (Rule of Law): আইনের শাসন সুশাসনের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। আইনের শাসন বলতে দেশের শাসন ব্যবস্থায় আইনের সুপ্রতিষ্ঠিত প্রাধান্যকে বোঝায়। আইনের শাসনের মূল কথা হলো: (ক) আইনের দৃষ্টিতে সকলে সমান ও (খ) সকলেরই আইনের সমান আশ্রয় লাভের সুযোগ।

৩. স্বচ্ছতা (Transparency): স্বচ্ছতা সুশাসনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। কোনো দেশের উন্নয়ন নিশ্চিতকল্পে সরকারের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সাধারণত স্বচ্ছতা বলতে জনগণের নিকট সরকারের নিয়মকানুন (Rules and Regulations) এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন সম্পর্কে তথ্যের অবাধকরণকে বোঝায়।

৪. দায়িত্বশীলতা (Responsibilities): দায়িত্বশীলতা সুশাসনের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। দায়িত্বশীলতা হলো সরকার ও প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ কর্তব্য সঠিকভাবে পালন। আর এ জন্য সরকারি কর্মচারীরা তথা সরকার জনগণের নিকট দায়বদ্ধ থাকবে। এ দায়বদ্ধতা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সুশাসনকে নিশ্চিত করে।

এল. ডি. হোয়াইট (L. D. White)-এর মতে, "প্রশাসনিক দায়িত্ব হলো সাংবিধানিক সংসদীয়, প্রশাসনিক ও বিচার বিভাগীয় আইনকানুন, দৃষ্টান্ত এবং ব্যবহৃত রীতিনীতির সামগ্রিক বহিঃপ্রকাশ যার মাধ্যমে সরকারি কর্মচারীকে তাদের নির্ধারিত কর্মকাণ্ড সম্পাদনের জন্য দায়ী করা হয়।"

৫. জবাবদিহিতা (Accountability): সুশাসনের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো জবাবদিহিতা। প্রশাসনিক জবাবদিহিতা হলো- আইনানুগ নির্দিষ্ট কর্মপদ্ধতির বিস্তৃত নিয়মকানুন যার মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে।

৬. 'বিকেন্দ্রীয়করণ (Decentralization) বিকেন্দ্রীয়করণ সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য অন্যতম অপরিহার্য শর্ত। বিকেন্দ্রীয়করণ বলতে বোঝায় ক্ষমতা, কর্তৃত্ব, দায়িত্ব ও সেবা প্রশাসনের উচ্চস্তর থেকে নিম্নস্তরে ছড়িয়ে দেওয়া। এর ফলে সরকারি কর্মকাণ্ডে জনগণের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পায়। জনগণ সহজেই সরকারি সেবা পেতে পারে এবং সময় ও অর্থের সাশ্রয় ঘটে। তাই বিকেন্দ্রীয়করণ সুশাসন প্রতিষ্ঠার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।

৭. লিঙ্গ বৈষম্যের অবসান (End of Gender disparity): লিঙ্গ বৈষম্য বা নারীদের প্রতি অবহেলা, তাদের কাজের যথাযথ মজুরি, মর্যাদা ও স্বীকৃতি না দেওয়া পুরুষ শাসিত সমাজের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। সুশাসন লিঙ্গ বৈষম্যকে সমর্থন করে না। তাই সুশাসন ব্যবস্থায় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যোগ্য ব্যক্তিকে উপযুক্ত পদে নিয়োগ প্রদান করে। এতে সামাজিক উন্নয়ন ও প্রগতি ত্বরান্বিত হয়।

৮. সেবাধর্মী মনোভাব (Service Oriented attitude): প্রশাসনের সেবাধর্মী মনোভাব সুশাসনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। প্রশাসন জনগণের জন্য, জনগণের কল্যাণে সবসময় কাজ করবে, নিয়োজিত থাকবে। জনগণের অর্থে প্রশাসন পরিচালিত হয়। তাই জনকল্যাণমুখী বা সেবাধর্মী মনোভাব নিয়ে জনপ্রশাসন কাজ করে যাবে- এটা সুশাসনের অপরিহার্য এক শর্ত।

৯. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা (Independence of the Judiciary): বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সুশাসনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বলতে বিচারকার্য পরিচালনায়, নিজ দায়িত্ব সম্পাদনের ক্ষেত্রে সকল প্রকার হস্তক্ষেপ, প্রভাব থেকে বিচারকদের মুক্ত থাকা এবং স্বাধীন ও নিজ দায়িত্ব সম্পাদনের ক্ষেত্রে সকল প্রকার হস্তক্ষেপ, প্রভাব থেকে বিচারকদের মুক্ত থাকা এবং স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের স্বাধীনতাকে বোঝায়। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা জনগণের অধিকার ও ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমুন্নত করে।

১০. গণমাধ্যমের স্বাধীনতা (Freedom of mass media) গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সুশাসনের বৈশিষ্ট্য হিসেবে বেশ তাৎপর্যময়। আধুনিককালে বিভিন্ন ধরনের গণমাধ্যম যেমন- সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশন, ইন্টারনেট, ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি ক্ষেত্র স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে- সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। গণমাধ্যমে দেশ ও জনগণের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে সরকার ও বিরোধী দলকে সচেতন করে তোলে। এতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়।

১১. বৈধতা (Legitimacy): সুশাসনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সরকারের বৈধতা, সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড, নীতি, সিদ্ধান্ত ও প্রণীত আইনের বৈধতা। অর্থাৎ সরকারের কর্মকাণ্ড ও নীতিসমূহের প্রতি জনগণের সমর্থন ও স্বীকৃতি থাকা প্রয়োজন। এ বৈধতা সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য বড় রকমের ভূমিকা পালন করে।

১২. ঐকমত্য (Consensus): সকলের মতের ঐক্য সুশাসনের আর একটি বৈশিষ্ট্য। জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সকলের মতের ঐক্যের প্রয়োজন রয়েছে। সকলের ঐকমত্য সুশাসন ও জাতীয় সংহতিকে শক্তিশালী করে।

১৩. সাম্য (Equity): সুশাসনের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো সাম্য। সুশাসনের জন্য অবশ্যই সকলের সম্মুখে যথার্থ সুযোগ-সুবিধার দ্বার উন্মুক্ত রাখতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো বৈষম্য করা যাবে না।

১৪. কার্যকারিতা ও দক্ষতা (Effectiveness and efficiency): কার্যকারিতা ও দক্ষতা সুশাসনের আর একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। সমাজের চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে সরকারের কার্যকারিতা ও দক্ষতার ওপরও সুশাসন নির্ভরশীল।

১৫. যৌলিক অধিকারের সংরক্ষণ (Preservation of fundamental rights): জনগণের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ ও নিশ্চিত করা সুশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। মৌলিক অধিকারের বাস্তবায়ন সমাজে সুশাসনকে নিশ্চিত করে।

এছাড়া সুশাসনের অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে-

  • রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা
  • সর্বনিম্ন বা নিয়ন্ত্রিত দুর্নীতি
  • মানবাধিকারের নিশ্চয়তা
  • পছন্দের স্বাধীনতা
  • সরকারের আইনগত বৈধতা
  • দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সু-সম্পর্ক
  • আমলাদের নিরপেক্ষ ভূমিকা
  • সামরিক-বেসামরিক সুসম্পর্ক চাহিদার প্রানি
  • জনগণের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ সহানুভূতিশীলতা।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ