• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
পৌরনীতি ও সুশাসন পরিচিতি

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

পৌরনীতি ও সুশাসন পরিচিতি

পৌরনীতি ও সুশাসন এবং জনসংখ্যা ও উন্নয়ন চর্চা (Civics, Good Governance and Population, Development Studies)

জনসংখ্যা ও উন্নয়ন চর্চা জনসংখ্যা সমস্যা, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, একটি দেশে কতটা জনসংখ্যা কাম্য ও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতিসমূহ বিশদভাবে আলোচনা করে। আর পৌরনীতি ও সুশাসন সুনাগরিকের গুণাবলি, নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্য এবং দেশপ্রেম সম্পর্কে আলোচনা করে। সুতরাং দুটি বিষয়ের মধ্যে নিবিড় সম্বন্ধ বিদ্যমান রয়েছে। তবে জ্ঞানের এ দুটি শাখার মধ্যে বেশ কিছু সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়। নিচে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

সাদৃশ্য:

১. অভিন্ন লক্ষ্য: পৌরনীতি ও সুশাসনের সাথে জনসংখ্যা ও উন্নয়ন চর্চার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। সামাজিক বিজ্ঞানের এ দুটি শাখার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন। পৌরনীতি নাগরিক অধিকার, সুশাসন, সরকারের দায়িত্বশীলতা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করে নাগরিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে চায়। তেমনি জনসংখ্যা ও উন্নয়ন চর্চা জনগণের সমস্যা, সমাধানের লক্ষ্যে উন্নয়নের বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করে জনগণের কল্যাণ ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে চায়।

২. বিষয়বস্তুগত দিক পৌরনীতি ও সুশাসন এবং জনসংখ্যা ও উন্নয়ন চর্চার মধ্যে বিষয়বস্তুগত অনেক সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়। উভয় শাস্ত্রই রাষ্ট্রে বসবাসকারী জনগণের আচার-আচরণ, সমস্যাদি, জনসংখ্যার হ্রাস-বৃদ্ধির সাথে উদ্ভূত সমস্যা এবং সমস্যাবলির নিরসনে নানা উপায় নিয়ে আলোচনা করে।

৩. একে অপরের পরিপূরক পৌরনীতি পাঠ ও জ্ঞান রাষ্ট্রে সুশাসনের পথ প্রশস্ত করে। আর তখন দেশের জনসংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম বা অধিক না হয়ে কাম্য জনসংখ্যায় পরিণত হয়। তখনই সুশাসন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। তাই পৌরনীতি ও সুশাসন এবং জনসংখ্যা ও উন্নয়ন চর্চা একে অপরের পরিপূরক ও সহায়ক হিসেবে কাজ করে।

৪. নিবিড় সম্পর্ক: পৌরনীতি ও সুশাসন এবং জনসংখ্যা ও উন্নয়ন চর্চার মধ্যে ঘনিষ্ঠ ও নিবিড় সম্পর্ক লক্ষ করা যায়। উভয় শাস্ত্র জনগণের কল্যাণ, জনসংখ্যার চাপ, জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে পরিণত করার উপায়, সুশাসন নিশ্চিত করার উপায় ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকে।

৫. মানবকল্যাণ: পৌরনীতি ও সুশাসন এবং জনসংখ্যা ও উন্নয়ন চর্চা মানুষের কল্যাণে নিরন্তর প্রয়াশ চালায়। দক্ষ জনশক্তি ব্যতীত, সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই উভয় শাস্ত্র জনসংখ্যাকে মূল্যবান সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর।

বৈসাদৃশ্য:

১. জনসংখ্যা ও উন্নয়ন চর্চা তুলনামূলক নবীন সময় ও বিষয়বস্তুর দিক থেকে জনসংখ্যা ও উন্নয়ন চর্চা অনেকটা নবীন বিষয়, কিন্তু পৌরনীতি ও সুশাসন প্রাচীন ও অনেকটা সুসংহত।

২. বিষয়বস্তুগত পার্থক্য পৌরনীতি ও সুশাসনের মূল আলোচ্য বিষয় হলো নাগরিকতা সম্পর্কিত বিষয়সমূহ। যেমন- কীভাবে নাগরিকতা অর্জন করা যায়, কীভাবে সুনাগরিক হওয়া যায়, নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্যসমূহ কী কী ইত্যাদি। অপরদিকে, জনসংখ্যা ও উন্নয়ন চর্চার মূল আলোচ্য বিষয় হলো জনসংখ্যা সমস্যা, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতিসমূহ, কীভাবে জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করা যায়।

৩. অনুশীলন পদ্ধতিগত পার্থক্য পৌরনীতি ও সুশাসনের অনুশীলন পদ্ধতি মূলত ঐতিহাসিক এবং তুলনামূলক, আর জনসংখ্যা ও উন্নয়ন চর্চার অনুশীলন পদ্ধতি প্রধানত গাণিতিক। e

৪. আদর্শ ও বস্তুনিষ্ঠতার দিক থেকে আদর্শ ও বস্তুনিষ্ঠতার দিক থেকে উভয় শাস্ত্রের মধ্যে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। পৌরনীতি ও সুশাসন একটি আদর্শ নির্ভর সামাজিক বিজ্ঞান। মূর্ত ও বিমূর্ত সব বিষয় নিয়ে পৌরনীতি ও সুশাসন আলোচনা করে। অন্যদিকে, জনসংখ্যা ও উন্নয়ন চর্চা মূর্ত ও বস্তুনিষ্ঠ বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করে থাকে।

তবে একথা ঠিক একটি দেশের উন্নয়ন চর্চার সাথে জনসংখ্যার বিষয়টি গভীরভাবে সম্পৃক্ত। একটি দেশের জনগণকে যদি দক্ষ, শিক্ষিত ও সচেতন করে তোলা হয় তবে উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত হয়। ফলে নাগরিক জীবনেও গুণগত পরিবর্তন সাধিত হয়। এ কারণে জনসংখ্যা ও উন্নয়ন চর্চার সাথে পৌরনীতি ও সুশাসনের বিষয়টি পারস্পরিক নির্ভরতার প্রশ্নে বেশ গুরুত্ব বহন করে।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ