- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
- ইংরেজ উপনিবেশিক শাসন: ব্রিটিশ আমল
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
ইংরেজ উপনিবেশিক শাসন: ব্রিটিশ আমল
১৮৫৮ সালের ভারত শাসন আইন (Indian Government Act 1858)
১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে মহাবিদ্রোহ বা প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ জাতীয় নেতৃত্বের অভাবসহ নানা কারণে ব্যর্থ হলেও ব্রিটিশ শাসনের ভিত নড়বড়ে হয়ে যায়। ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এ মহাবিদ্রোহের পর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে। এই মহাবিদ্রোহের পর ব্রিটিশ সরকার উপলব্ধি করতে পারে যে, ভারতবর্ষের ন্যায় এত বড় একটি রাষ্ট্রের শাসন করার ভার একটি কোম্পানির হাতে ছেড়ে দেওয়া যায় না। এই উপলব্ধি থেকেই ১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দে ইংল্যান্ডের মহারানি ভিক্টোরিয়া এক ঘোষণা বলে ভারতে ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটিয়ে ভারতের শাসন ব্যবস্থা স্বহস্তে গ্রহণ করেন। মহারানির এই ঘোষণার প্রায় একশ বছরে কোম্পানির দুঃশাসনের অবসান ঘটে এবং শুরু হয় ব্রিটিশ শাসন। মহারানির এ রাজকীয় ঘোষণা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ঘোষণা দ্বারা মহারানি ভারতীয় রাজন্যবর্গ ও জনসাধারণের ক্ষোভ প্রশমনের লক্ষ্যে বেশকিছু প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। এতদসংক্রান্ত মহারানির ঘোষণাই ইতিহাসে ১৮৫৮ সালে ভারত শাসন আইন নামে পরিচিত।'
১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দের ঘোষণায় মহারানি বলেন-
১. ইতঃপূর্বে কোম্পানি তাদের শাসনামলে ভারতীয় শাসক ও রাজন্যবর্গের সাথে যেসব বিষয়ে চুক্তি সম্পাদন ও প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছে সেগুলো সযত্নে পালিত হবে।
২. ব্রিটিশ প্রজাদের মতোই বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকল ভারতীয় প্রজাকে তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ করা হবে।
৩. ভারতীয় জনসাধারণের স্ব-স্ব ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহিষ্ণুতা প্রদর্শন করা হবে। কোনো অবস্থায় খ্রিষ্টধর্ম চাপিয়ে দেওয়া হবে না। অর্থাৎ ধর্মীয় ক্ষেত্রে ভারতীয়দের পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হবে।
৪. মহাবিদ্রোহের সময় ব্রিটিশ নরনারীকে হত্যার দায়ে কাউকে অভিযুক্ত করা হয়নি এবং যারা এখনও ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করেছে তাদের সকলের প্রতি রাজকীয় ক্ষমা প্রদর্শন করা হবে।
৫. লর্ড ডালহৌসি প্রবর্তিত সাম্রাজ্যবাদনীতি ও স্বত্ব বিলোপনীতি পরিত্যক্ত করা হবে।
৬. উক্ত ঘোষণায় ভারতীয়দের কল্যাণে এবং উন্নয়নে আরও বলা হয়, ভারতের জনগণের উন্নতিই সরকারের শক্তি বৃদ্ধি, ভারতীয়দের পরিতৃপ্তিই ব্রিটিশ সরকারের নিরাপত্তা, তাদের কৃতজ্ঞতাই ব্রিটিশ সরকারের জন্য শ্রেষ্ঠ বলে বিবেচিত হবে। মহারানি ভিক্টোরিয়ার উল্লিখিত আবেগময় ঘোষণায় ভারতীয় জনসাধারণের ক্ষোভ হ্রাস পায় এবং ব্রিটিশ সরকারের সাথে সম্পর্ক ক্রমশ উন্নয়ন ঘটে।
১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দের ২ আগস্ট ব্রিটিশ পার্লামেন্ট এক আইন পাস করে ভারতের শাসনভার মহারানি ভিক্টোরিয়ার হস্তে অর্পণ করেন। যেহেতু রানির পক্ষে সরাসরি ভারতে শাসন করা সম্ভব ছিল না, সেহেতু ব্রিটিশ সিংহাসনের প্রতিনিধি হিসেবে ...গভর্নর জেনারেল পদে 'ভাইসরয়' বা রাজপ্রতিনিধি নিযুক্ত করা হয়। কোম্পানির পরিচালক বোর্ড অব কন্ট্রোলের পরিবর্তে ব্রিটিশ কেবিনেট মন্ত্রীদের মধ্যে থেকে একজনকে ভারত সচিবের পদে নিযুক্ত করা হয় এবং তিনি ১৫ জন সদস্যবিশিষ্ট একটি কাউন্সিলের সাহায্যে ভারতের শাসনকার্য পরিচালনা করবেন স্থির হয়।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ

