- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
- ইংরেজ উপনিবেশিক শাসন: ব্রিটিশ আমল
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
ইংরেজ উপনিবেশিক শাসন: ব্রিটিশ আমল
ভারত শাসন আইনের প্রক্রিয়া (Procedure of Indian Government Act)
মহারানির ঘোষণা এবং পার্লামেন্টের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ভারতবর্ষে অবস্থানরত গভর্নর জেনারেল লর্ড ক্যানিংই প্রথম রাজপ্রতিনিধি বা ভাইসরয় নিযুক্ত হন (১৮৫৮-১৮৬২)। রাজপ্রতিনিধি হিসেবে শাসনভার গ্রহণ করে লর্ড ক্যানিং উদার নীতির মাধ্যমে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মনোনিবেশ করেন। পাশাপাশি ভারতীয়দের শান্ত রাখতে বেশ কিছু সংস্কারের কাজে হাত দেন। যেমন-
(ক) আইন সংস্কার: তিনি ভারতীয় দেওয়ানি আদালত এবং নেজামত আদালত একত্রিত করে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর আইন সচিব কর্তৃক ভারতীয় দণ্ডবিধি আইন প্রণীত হয়। লর্ড ক্যানিং ভারতীয় সিভিল অ্যাকট পাস করে ভারতীয়দের জন্য বেশ কয়েকটি উচ্চপদ সংরক্ষিত করে ভারতীয় সিভিল সার্ভিসের দ্বার উন্মুক্ত করেন।
(খ) সামরিক সংগঠন লর্ড ক্যানিং কোম্পানির সময়ের সৈন্যবাহিনী ভেঙে দিয়ে আবার নতুন করে সেনাবাহিনী গঠন করেন। সেনাবিভাগে তিনি ভারতীয় সেনা কম ভর্তি করে ইউরোপীয় সৈন্যবাহিনীর সংখ্যা বৃদ্ধি করেন। অস্ত্রাগারের দায়িত্ব তিনি ব্রিটিশ সৈন্যের হাতে ন্যস্ত করেন।
(গ) রাজস্ব সংস্কার: ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দের সংগ্রামে কোম্পানির অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়ে। অর্থনৈতিক দুরবস্থা পুষিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে লর্ড ক্যানিং ইংল্যান্ডের দুজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শে নতুন রাজস্ব ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। এ ব্যবস্থা অনুযায়ী আয়কর বৃদ্ধি, পথকর স্থাপন এবং কাগজের মুদ্রা প্রবর্তন করা হয়। তিনি সামরিকসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যয় সংকোচন নীতি গ্রহণ করে রাজস্ব ঘাটতি পূরণে সক্ষম হন।
(ঘ) শিক্ষা সংস্কার: শিক্ষা ক্ষেত্রেও তার অবদান রয়েছে। ভারতবর্ষে শিক্ষা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কলকাতা, মাদ্রাজ ও মুম্বাইয়ে তিনি তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি একদিকে উপমহাদেশের মহাবিদ্রোহ দমন করে তাঁর দেশবাসীর নিকট থেকে ভূয়সী প্রশংসা লাভ করেন। অপরদিকে, ১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দে রাজস্ব আইন প্রণয়ন করে জমিদারদের অত্যাচার থেকে প্রজাদের রক্ষা, কাগজের মুদ্রা প্রচলন, ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে সর্বোচ্চ ক্ষমতাবিশিষ্ট আদালত 'হাইকোর্ট' প্রতিষ্ঠা এবং কলকাতা, মাদ্রাজ, মুম্বাইয়ে ৩টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ বেশ কিছু জনগুরুত্বপূর্ণ কাজ করে ভারতবাসীর নিকট জনদরদি শাসকে পরিণত হন। ভারতের এই জনদরদি শাসক ১৮৬২ খ্রিষ্টাব্দে অবসর গ্রহণ করে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন।
লর্ড ক্যানিং-এর পর ধারাবাহিকভাবে নিম্ন বর্ণিত ভাইসরয়গণ ব্রিটিশ সরকারের প্রতিনিধি রূপে ভারতবর্ষ শাসন করেন। লর্ড এলগিন (১৮৬২-১৮৬৩ খ্রি.), স্যার জন লরেন্স (১৮৬৪-১৮৬৯ খ্রি.), লর্ড মেয়ো (১৮৬৯-১৮৭২ খ্রি.), লর্ড নর্থব্রুক (১৮৭২-১৮৭৬ খ্রি.), লর্ড লিটন (১৮৭৬-১৮৮০ খ্রি.), লর্ড রিপন (১৮৮০-১৮৮৪ খ্রি.), লর্ড দ্বিতীয় এলগিন (১৮৯৪-১৮৯৯ খ্রি.), লর্ড কার্জন (১৮৯৯-১৯০৫ খ্রি.), লর্ড মিন্টো (১৯০৫-১৯১০ খ্রি.) ভারতের ভাইসরয় নিযুক্ত হন। তন্মধ্যে লর্ড লিটন, লর্ড রিপন ও লর্ড কার্জনের নাম ভারতবর্ষের ইতিহাসে বিশেষ স্থান দখল করে আছে।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ

