- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
- ইংরেজ উপনিবেশিক শাসন: ব্রিটিশ আমল
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
ইংরেজ উপনিবেশিক শাসন: ব্রিটিশ আমল
পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮২০-১৮৯১ খ্রি.) [Pandit Ishwar Chandra Vidyasagar (1820-1891 AD)]
রাজা রামমোহন রায়ের মৃত্যুর পর শুকিয়ে যাওয়া সমাজ সংস্কারের হাল ধরেন পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি বিদ্যাসাগর নামেই পরিচিত। তিনি কলকাতার মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে ১৮২০ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ সেপ্টেম্বর এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শ্রী ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন কলকাতার একজন দোকান কর্মচারী। মাতা ভগবতী দেবী। গ্রামের পাঠশালায় পাঠ সমাপ্ত করে আট বছর বয়সে গ্রামের বাড়ি থেকে পিতার সঙ্গে পদব্রজে কলকাতায় গমন করেন। সেখানে ১৮২৯ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুন সরকারি সংস্কৃত কলেজে ভর্তি হন। এ কলেজে একাদিক্রমে বারো বছর অধ্যয়নকালে ব্যাকরণ, কাব্য, বেদান্ত, স্মৃতি, ন্যায়, অলঙ্কার ও জ্যোতিষ শাস্ত্রে অগাধ পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। ১৮৩৯ খ্রিষ্টাব্দে এসব বিষয়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি 'বিদ্যাসাগর' উপাধি লাভ করেন। অধ্যয়ন শেষে ১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ ডিসেম্বর ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের বাংলা বিভাগে হেড পণ্ডিত পদে যোগদান করেন।
এখানে পাঁচ বছর তিন মাস অধ্যাপনা করার পর ১৮৪৬ খ্রিষ্টাব্দের ৪ এপ্রিল সংস্কৃত কলেজে সহকারী সম্পাদক পদে যোগদান করেন। পরে এ কলেজে তিনি সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক পদ গ্রহণ করেন (১৮৫০)। ১৮৫১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি উক্ত কলেজের অধ্যক্ষের পদ গ্রহণ করেন। তিনি সংস্কৃত কলেজে ইংরেজি শিক্ষা আবশ্যককরণ সহ শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক সংস্কার সাধন করেন। তিনি সংস্কৃত ব্যাকরণের উপক্রমণিকা (১৮৫১), ব্যাকরণ কৌমুদীর ৪টি খণ্ড (১৮৫৩-১৮৬২), বর্ণ পরিচয় (১৮৫৫) প্রভৃতি গ্রন্থ রচনা করেন। সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য তাকে বাংলা গদ্যের জনক বলা হয়। তাঁর পূর্ববর্তী লেখকদের গদ্য সাহিত্য ও ছন্দে মাধুর্যের অভাব ছিল। বিদ্যাসাগরের হাতেই বাংলা গদ্যের মুক্তি সূচিত। তাঁর অন্যতম সংস্কার বিধবা বিবাহ চালু (১৮৫৬), বহু বিবাহ প্রথা বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ। দান-দাক্ষিণ্যের জন্যও তার সমান খ্যাতি রয়েছে। প্রবাসী মাইকেল মধুসূদনও তাঁর দানের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন।
শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও মানবতাবাদী বিদ্যাসাগর বিশাল জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। শ্রীরামকৃষ্ণ বিদ্যাসাগর সম্পর্কে বলেছেন, 'খাল নয়, নালা নয় এ প্রকৃতই সাগর'। তিনি ১৮৭৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারত সরকার কর্তৃক সি.আই.ই উপাধিতে ভূষিত হন। বাংলা ভাষার জনক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ১৮৯১ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ জুলাই পরলোকগমন করেন।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ

