- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
- ইংরেজ উপনিবেশিক শাসন: ব্রিটিশ আমল
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
ইংরেজ উপনিবেশিক শাসন: ব্রিটিশ আমল
নেহেরু রিপোর্ট-১৯২৮ (Neheru Report-1928)
কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ সাইমন কমিশনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে সাইমন কমিশন স্বদেশে ফিরে যায়। তৎকালীন ভারত সচিব বার্কেনহেড ভারতীয় নেতাদের কাছে সর্বসম্মত একটি সংবিধান তৈরির চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন। ভারতীয় নেতারা এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন। উপমহাদেশের সাংবিধানিক সংকট নিরসনের জন্য কংগ্রেস নেতা মতিলাল নেহেরুর নেতৃত্বে একটি কমিটি ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দের ১০ আগস্ট একটি রিপোর্ট পেশ করেন। এটাই ইতিহাসে 'নেহেরু রিপোর্ট' নামে পরিচিত। এ রিপোর্টে বলা হয়-
১. সমগ্র ভারতে যুক্ত মিশ্র নির্বাচন হবে।
২. গণপরিষদে (কেন্দ্রীয় আইনসভা) কোনো আসন সংরক্ষিত থাকবে না তবে যেসব প্রদেশে মুসলমানরা সংখ্যালঘু তাদের জন্য এবং উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের হিন্দুদের জন্য আসন সংরক্ষিত থাকবে। এ ধরনের আসন সংরক্ষণ শুধু ঐসব প্রদেশের মুসলমান জনগোষ্ঠীর সংখ্যানুপাতে হবে যেখানে তারা সংখ্যালঘু এবং উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের অমুসলমান জনগোষ্ঠীর সংখ্যানুপাতে। যেসব প্রদেশে হিন্দু বা মুসলমানদের জন্য আসন সংরক্ষণ করা হয়েছে সেখানে তারা ইচ্ছা করলে বাড়তি আসনের জন্যও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে।
৩. ক. পাঞ্জাব ও বাংলাদেশ কোনো সম্প্রদায়ের জন্য কোনো আসন সংরক্ষিত থাকবে না।
খ. পাঞ্জাব ও বাংলাদেশ ব্যতীত অন্যান্য প্রদেশে মুসলমান সংখ্যালঘুদের জন্য জনসংখ্যানুপাতে আসন সংরক্ষিত থাকবে এবং তৎসঙ্গে বাড়তি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অধিকারও থাকবে।
গ. উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে অমুসলমানদের জন্য অনুরূপ আসন সংরক্ষিত থাকবে এবং তৎসঙ্গে বাড়তি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অধিকারও থাকবে।
৪. যেসব প্রদেশে আসন সংরক্ষিত রাখা হয়েছে তা সেখানে দশ বছরের জন্য বলবৎ থাকবে।
৫. সিন্ধুকে বোম্বে থেকে পৃথক করে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রদেশে রূপান্তরিত করা হবে, তবে অর্থনৈতিক অবস্থা পর্যালোচনা করে আলাদা প্রদেশ কার্যকরী হবে।
৬. উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ এবং এ ধরনের গঠিত নতুন প্রদেশসমূহ অন্যান্য প্রদেশের ন্যায় সরকার গঠন করবে।
এ রিপোর্টে মুসলমানদের জন্য পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা প্রত্যাখ্যান করা হয়। মুসলিম নেতৃবৃন্দ দলমত নির্বিশেষে এ রিপোর্টের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানায়। মুসলিম লীগ, কংগ্রেসের একাংশ ও হিন্দু মহাসভা নেহেরু রিপোর্টের বিরোধিতা করে, প্রকৃতপক্ষে নেহেরু রিপোর্ট ভারতে বিদ্যমান পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করতে ব্যর্থ হয়। এ রিপোর্ট প্রকাশে সাম্প্রদায়িক ঐক্য ভেঙে পড়ে। ফলে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে পার্থক্য বৃদ্ধি পায়।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ

