• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
  • ইংরেজ উপনিবেশিক শাসন: ব্রিটিশ আমল
ইংরেজ উপনিবেশিক শাসন: ব্রিটিশ আমল

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

ইংরেজ উপনিবেশিক শাসন: ব্রিটিশ আমল

মন্ত্রী মিশন পরিকল্পনা-১৯৪৬ Cabinet Mission Planing-1946

ক্রিপস মিশন ব্যর্থ হওয়ার পর সমগ্র ভারতব্যাপী তীব্র অসন্তোষের সৃষ্টি হয়। এরই মধ্যে ১৯৪৫ সালের জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচনে চার্চিলের রক্ষণশীল দলের শোচনীয় পরাজয় ঘটে এবং শ্রমিক দল নির্বাচনে জয়লাভকরে সরকার গঠন করে। ক্লেমেন্ট এটলি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হন। নতুন সরকার উপলব্ধি করতে সক্ষম হলেন যে, ভারতবর্ষে তাদের পক্ষে বেশিদিন শাসন করা সম্ভব নয়। সে কারণে তিনি ভারতীয়দের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

১৯৪৬ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি এটলি ঘোষণা করলেন যে, ভারতের ভবিষ্যৎ সংবিধান রচনার ব্যাপারে ভারতীয় নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপ-আলোচনার জন্য ব্রিটিশ সরকার ভারতে একটি মন্ত্রী মিশন পাঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। অতঃপর ব্রিটিশ সরকার তিন সদস্যের একটি মিশন ভারতবর্ষে প্রেরণ করেন। ভারত সচিব লর্ড প্যাথিক লরেন্সের নেতৃত্বে এ মিশনের অপর সদস্য দুজন হলেন-

(১) স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস
(২) এ. ভি. আলেকজান্ডার

তিনটি অংশে বিভক্ত এই মন্ত্রী মিশন পরিকল্পনার সুপারিশসমূহ ছিল-

১। ভবিষ্যৎ সংবিধান সম্পর্কিত সুপারিশ:

(ক) ব্রিটিশ ভারত ও দেশীয় রাজ্যগুলো নিয়ে একটি সর্বভারতীয় যুক্তরাষ্ট্র গঠিত হবে।

(খ) ব্রিটিশ ভারত ও দেশীয় রাজ্যগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে ভারত ইউনিয়নের শাসন বিভাগ ও আইনসভা গঠিত হবে।

(গ) ইউনিয়নের হাতে প্রদত্ত বিষয়গুলো ছাড়া অন্যান্য সব বিষয় প্রদেশগুলোর হাতে সমর্পণ হবে।

(ঘ) ব্রিটিশ ভারতের প্রদেশসমূহকে সাম্প্রদায়িক ভিত্তিতে ক, খ ও গ এই তিনটি শাখায় বিভক্ত করা হয়। 'ক' শাখায় থাকবে ৬টি হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশ, 'খ' শাখায় থাকবে উত্তর-পশ্চিম ভারতের মুসলমানগণ সংখ্যাগরিষ্ঠ ৩টি প্রদেশ ও 'গ' শাখায় থাকবে পূর্ব ভারতের মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ ২টি প্রদেশ।

(ঙ) ইউনিয়ন ও গ্রুপগুলোর সংবিধানে এমন শর্ত থাকবে যে, প্রাথমিকভাবে ১০ বছর এবং পরবর্তী পর্যায়ে প্রতি ১০ বছর অন্তর যেকোনো প্রদেশ তার আইনসভার অধিকাংশ সদস্যদের সম্মতিক্রমে সংবিধানের ধারাসমূহ পুনর্বিবেচনা করতে পারবে।

২। গণপরিষদ সংক্রান্ত প্রস্তাবসমূহ: সংবিধান রচনার জন্য একটি গণপরিষদ গঠিত হবে। এই গণপরিষদের সদস্যগণ জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রাদেশিক আইন পরিষদের সদস্যদের দ্বারা পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হবেন।

৩। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নতুন সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের শাসন পরিচালনার জন্য প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে কেন্দ্র একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করবে।

কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের মধ্যে পারস্পরিক সন্দেহ ও দ্বন্দ্ব এবং হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে চরম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও অশান্তময় পরিস্থিতির মধ্যে মন্ত্রী মিশন পরিকল্পনা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ