- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
মূল্যবোধ, আইন, স্বাধীনতা ও সাম্য
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
মূল্যবোধ, আইন, স্বাধীনতা ও সাম্য
মূল্যবোধ ও সুশাসন | Values and Good Governance
মূল্যবোধ এমন একটি মানদণ্ড যার দ্বারা সমাজের মানুষের কর্মকাণ্ডের ভালো-মন্দ বিচার করা হয়। মূল্যবোধ সম্পন্ন ব্যক্তির আচার-আচরণ সুনিয়ন্ত্রিত হয়। মূল্যবোধ এমন কতকগুলো গুণাবলি যা আদর্শ হিসেবে মানুষ অনুসরণ করে। মানুষের ব্যবহার ও রীতিনীতি মূল্যবোধের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় বিধায় এর মাধ্যমে সামাজিক শৃঙ্খলা, নিয়ন্ত্রণ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। আর এজন্যই মূল্যবোধ এবং সুশাসন উভয়ের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান।
সুশাসন হলো ন্যায়ভিত্তিক জনকল্যাণকর শাসন, যেখানে সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা এবং সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণ থাকে। স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার বিষয়টি মূল্যবোধের সাথে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত। মূল্যবোধের একটি অন্যতম ভিত্তি বা উপাদান হলো জবাবদিহিতা। এই জবাবদিহিতা শুধু সরকারের একার জন্য নয়, বরং সরকারসহ সমাজের সর্বস্তরের নাগরিকের জন্য। আবার সুশাসনের জন্য গণতান্ত্রিক শাসন অপরিহার্য, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ, থাকে। কারণ জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া গণতন্ত্র অর্থবহ ও কার্যকর হয় না।
মূল্যবোধের আদর্শ যেসব বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত সেগুলো হলো- ঔচিত্যবোধ, ন্যায়বিচার, শৃঙ্খলা, সহনশীলতা ও সহমর্মিতা, নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য, আইনের শাসন, সরকারের জবাবদিহিতা এবং সরকার ও রাষ্ট্রের জনকল্যাণমুখী কর্মকাণ্ড।
উপর্যুক্ত বিষয়গুলো সুশাসনের জন্যও অপরিহার্য। মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়েই মানুষ অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয় এবং দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে উদ্বুদ্ধ হয়। সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ যখন শাসনের সুফল ভোগ করে, তখন সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বিরাজ করে, মানব মর্যাদা প্রতিষ্ঠা পায় ও ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটে। দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, বৈষম্য, পক্ষপাতিত্ব এবং নীতিবর্জিত কাজ যেমন মূল্যবোধের পরিপন্থী, তেমনি সুশাসনের পথে অন্তরায়।
আইনের শাসন মূল্যবোধের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আইনের শাসন ব্যক্তির অধিকার ও স্বাধীনতাকে নিশ্চিত করে। আইনের শাসনের ফলে ব্যক্তি তার সামাজিক মর্যাদা অনুধাবন করতে পারে এবং অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হয়। আইনের শাসন সুশাসনেরও একটি আবশ্যকীয় উপাদান। আইনের শাসন না থাকলে যেমন সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয় না, তেমনি সুশাসন না থাকলে আইনের শাসন চালু করা সম্ভব নয়। এদিক দিয়ে মূল্যবোধ ও সুশাসনের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর।
মূল্যবোধ মানুষের নৈতিক গুণাবলি জাগ্রত করে। সমাজজীবনকে নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত করে। মূল্যবোধ সামাজিক ঐক্য ও শৃঙ্খলা সুপ্রতিষ্ঠিত করে। আর ঐক্য ও শৃঙ্খলাবোধ সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথকে প্রশস্ত করে।
সুতরাং মূল্যবোধের আদর্শ জাগ্রত আছে এমন সমাজ ও রাষ্ট্র সুশাসন প্রতিষ্ঠার অনুকূল। তাই বলা হয়, ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে মূল্যবোধ ও সুশাসনের সম্পর্ক খুবই নিবিড় ও গভীর।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ