• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
  • মূল্যবোধ, আইন, স্বাধীনতা ও সাম্য
মূল্যবোধ, আইন, স্বাধীনতা ও সাম্য

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

মূল্যবোধ, আইন, স্বাধীনতা ও সাম্য

সাম্য | Equality

পৌরনীতি ও সুশাসনের তাত্ত্বিক বিষয়গুলোর মধ্যে সাম্য (Equality) অন্যতম। প্রাচীনকালের গ্রিক দার্শনিকগণ থেকে শুরু করে আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানিগণ পর্যন্ত সকলেই সাম্যের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা সাম্য সংক্রান্ত আলোচনায় তুমুল বিতর্কের ঝড় তুলেছেন। কারণ সাম্য ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা স্বাধীনতা ও অধিকার উপভোগের জন্য অত্যন্ত জরুরি। সাম্য প্রতিষ্ঠা করা আধুনিক গণতান্ত্রিক ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের লক্ষ্য। মূলত সাম্য বলতে সমাজে সকলের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধাকে বোঝায়, যেখানে কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা বিশেষ কোনো মহলের জন্য বিশেষ ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকবে না। সাম্য ভিত্তিক সমাজেই কেবল সকলের সমান অবস্থান আশা করা যায়। আর এজন্যই সমাজ জীবনে সাম্যের গুরুত্ব অত্যধিক।

সাম্যের ধারণা (Concept of Equality)

আধুনিক পৌরনীতির পরিধি ও বিষয়বস্তুর মধ্যে যে সকল বিষয় অতীব গুরুত্বের সাথে আলোচিত হয়ে থাকে তন্মধ্যে সাম্য অন্যতম। প্রাচীন গ্রিক দার্শনিকগণ থেকে শুরু করে আধুনিক চিন্তাবিদদের সকলেই সাম্যের ওপর অধিক গুরুত্বারোপ করেছেন। সাম্য ও সমানাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যুগে যুগে বহু রক্তক্ষয়ী বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে যা ইতিহাসে সাক্ষ্য মেলে।
সাধারণত সাম্য বলতে, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী ও নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সমাজের সকল মানুষের সমান সুযোগ-সুবিধা, অধিকার ও স্বাধীনতা ভোগ করাকে বোঝায়। পৌরনীতিতে সাম্য কথাটির বিশেষ অর্থ রয়েছে। পৌরনীতিতে সাম্যের অর্থ হচ্ছে, সুযোগ-

সুবিধার সমতা (Equality of Opportunities)। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ সাম্য সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের মত প্রকাশ করেছেন-

অধ্যাপক লাঙ্কি (Laski) সাম্য সম্পর্কে বলেন, "সাম্য বলতে সকলের জন্য উপযুক্ত সুযোগ-সুবিধার দ্বার উন্মুক্ত করে দেওয়াকে বোঝায়।" (Equality means that adequate opportunities are laid open to all.)

অধ্যাপক বার্কার (Barker) বলেছেন, "সাম্য কথাটির অর্থ সুযোগ-সুবিধা বা অধিকার বণ্টনের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার পার্থক্য সৃষ্টি না করা। ফলে প্রত্যেকের ব্যক্তিত্ব সমানভাবে বিকশিত হবে।"

জন স্টুয়ার্ট মিল (John Stuart Mill)-এর মতে, "সবার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা প্রদানই হলো সাম্য।" (Equality mean adequate opportunities are to be laid open to all.)

মার্কসবাদীদের মতে, "ব্যক্তিগত সম্পত্তি, শ্রেণিবৈষম্য ও শ্রেণিশোষণ প্রভৃতি অবসানের মাধ্যমে সমাজে সকলের সমান সুযোগ সুবিধার পরিবেশ সৃষ্টি করাই হচ্ছে সাম্য।"

সাম্য কথাটি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে তিনটি বিশিষ্টার্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যথা:

প্রথমত, সাম্য বলতে সমতা ভিত্তিক ব্যবস্থাকে বোঝায়। অর্থাৎ সমাজে সকলের অবস্থান সমান। কেউ এমন অবস্থানে আসীন হবে না যার কারণে অন্যের অস্তিত্বই বিলীন হয়ে যায়। অর্থাৎ প্রত্যেকের সর্বোৎকৃষ্ট সত্তার উপলব্ধির সুযোগ থাকতে হবে। সামাজিক শক্তি ও উৎপাদনের উপকরণসমূহ এমনভাবে সজ্জিত হবে যাতে প্রত্যেকের কর্মের ব্যবস্থা হয় এবং যথোপযুক্ত মজুরি পায়।

দ্বিতীয়ত, সাম্য বলতে বিশেষ সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থার অনুপস্থিতিকে নির্দেশ করে। অধ্যাপক এইচ. জে. লাস্কি (Prof. H. J. Laski) বলেন, "Equality means first of all the absence of special privilege." সাম্যের প্রকাশরূপ সমাজে প্রচলিত সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সুযোগ-সুবিধা যাতে প্রত্যেকের জন্য সমান হয়, কেউ যেন বিশেষ কোনো প্রভাবের কারণে বেশি সুযোগ-সুবিধা লাভ করতে না পারে।

তৃতীয়ত, সকলের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা। এ সম্পর্কে অধ্যাপক এইচ. জে. লাস্কি (Prof. H. J. Laski) বলেন, রাষ্ট্র কেবল সকলের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করবে যাতে প্রত্যেকের ব্যক্তিত্বের বিকাশের সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ সাম্য বলতে ব্যক্তিত্ব বিকাশের ক্ষেত্রে সকলের সমান সুযোগ-সুবিধা বোঝায়। বলা হয়, "Equality is a levelling process." (সাম্য হলো সমতা বিধানের প্রক্রিয়া।)

আধুনিক গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় সাম্য বলতে নারী-পুরুষের ভোটাধিকার, প্রয়োজনীয় যোগ্যতানুযায়ী চাকরি লাভের অধিকার, রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ক্ষমতা লাভের অধিকারকে বোঝায়। যেমন- অধ্যাপক এইচ. জে. লাস্কি (Prof. H. J. Laski) বলেন,

"সাম্য হলো সেই সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা যাতে কোনো ব্যক্তিত্বকে অন্যের সুবিধার বেদিতে আত্মবিসর্জন দিতে না হয়।"

তাই সাম্য বলতে মানবজীবনের সেই পরিবেশ বা প্রক্রিয়াকে বোঝানো হয়, যেখানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়, সুষম পরিবেশ গড়ে তোলা হয় এবং সবাইকে সমানভাবে ব্যক্তিত্ব বিকাশের সুযোগ প্রদান করা হয়।

সাম্যের শ্রেণিবিভাগ (Classification of equality)

ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের বিকাশের জন্য সাম্য অপরিহার্য। কারণ সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে সাম্যাবস্থা বিরাজ করলে মানুষ সে সুযোগ গ্রহণ করে আত্মবিকাশ ঘটাতে পারে। সাম্যের প্রকারভেদ সম্পর্কে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মধ্যে মতানৈক্য বিদ্যমান।

আর্নেস্ট বার্কার (Ernest Barker) দুই প্রকার সাম্যের কথা বলেন। যথা:

(i) আইনগত সাম্য (Legal Equality) এবং

(ii) সামাজিক সাম্য (Social Equality) ।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী লাস্কি (H. J. Laski)-ও দুই প্রকার সাম্যের উল্লেখ করেছেন। যথা:

(i) রাজনৈতিক সাম্য (Political Equality) এবং

(ii) সামাজিক সাম্য (Social Equality)।

আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা উপরিউক্ত আলোচনার আলোকে নিম্নোক্ত সাত প্রকার সাম্যের কথা বলেছেন। নিম্নে সাম্যের প্রকারভেদ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

১। সামাজিক সাম্য

২। রাজনৈতিক সাম্য

৩। অর্থনৈতিক সামা

৪। আইনগত সাম্য 

৫। স্বাভাবিক সামা

৬। নাগরিক সাম্য 

৭। শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সাম্য

১. সামাজিক সাম্য (Social equality): সামাজিক সাম্য বলতে বোঝায় সমাজের দৃষ্টিতে মানুষের সঙ্গে মানুষের সমতা। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, বংশ-মর্যাদা, প্রভাব-প্রতিপত্তি নির্বিশেষে যখন কোনো মানুষের সাথে কোনো মানুষের পার্থক্য নিরূপণ করা হয় না তখন তাকে সামাজিক সাম্য বলা হয়। মূলত সামাজিক দৃষ্টিতে সকল মানুষ সমান, সমমর্যাদাবান ও সমান সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন।

২ . রাজনৈতিক সাম্য (Political equality): রাজনৈতিক সাম্য রাজনৈতিক অধিকার (Political rights) ভোগের সমতাকে নির্দেশ করে। রাজনৈতিক অধিকার বলতে বোঝায় ভোটাধিকার, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অধিকার, মতামত প্রকাশের অধিকার ও সরকারি চাকরি লাভের অধিকারকে। রাজনৈতিক সাম্য ব্যবস্থা গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার অন্যতম শর্ত হিসেবে গণ্য।

৩. অর্থনৈতিক সাম্য (Economic equality): ধনবৈষম্যপূর্ণ সমাজে কখনই অধিকার ও স্বাধীনতার সুফল আশা করা যায় না। আবার, অর্থনৈতিক গণতন্ত্র ছাড়া রাজনৈতিক গণতন্ত্র অর্থহীন। সাম্য বলতে যদি ব্যক্তিত্ব বিকাশের পূর্ণ সুযোগ-সুবিধাকে বোঝায় তাহলে অর্থনৈতিক সাম্যের গুরুত্ব অত্যধিক। অর্থনৈতিক সাম্যের অনুপস্থিতিতে সাম্যের প্রকৃত আদর্শ ব্যর্থতায় নিমজ্জিত হয়।

৪. আইনগত সাম্য (Legal equality): আইনের আলোকে সাম্য বা সমঅধিকার স্বীকৃত হলে আইনগত সাম্য প্রতিষ্ঠা পায়। আইনের চোখে সকলেই সমান, সকল ব্যক্তির জন্য আইন সমভাবে প্রযোজ্য- এটাই আইনগত সাম্যের মূল কথা। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রব্যবস্থায় রাষ্ট্র যেহেতু একটি বিশেষ শ্রেণির প্রভুত্ব করে সেহেতু এরূপ রাষ্ট্র কখনই সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে পারে না।

৫. স্বাভাবিক সাম্য (Natural equality): স্বাভাবিক বা প্রাকৃতিক সাম্য বলতে বোঝায় জন্মগতভাবেই মানুষ সমান অধিকারসম্পন্ন। জন্মগতভাবে মানুষে মানুষে কোনো পার্থক্য নেই। সমান অধিকার সহজাত। এটাই স্বাভাবিক সাম্যের মূল কথা। আমেরিকার স্বাধীনতা ঘোষণায় স্বাভাবিক সাম্যের কথা উল্লেখ থাকলেও বর্তমানে এ ধারণার অবসান ঘটেছে। কেননা শক্তি-সামর্থ্য, বুদ্ধিবৃত্তি, প্রতিভা ও যোগ্যতা তা প্রভৃতির প্রভৃতির ক্ষেত্রে মানুষ সমানভাবে জন্মায় না। এসব ক্ষেত্রে পার্থক্য বিদ্যমান।

৬. নাগরিক সাম্য বা ব্যক্তিগত সাম্য (Individual equality): নাগরিক সাম্য বা ব্যক্তিগত সাম্যের অর্থ হলো রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের সমান অধিকার। অর্থাৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের মধ্যে সাম্য বা ব্যক্তিগত সাম্য থাকতে হবে।

৭. শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সাম্য (Educational and cultural equality): সাম্যের ধারণাকে শিক্ষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে সম্প্রসারিত করার বিষয়টি বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। সাংস্কৃতিক সাম্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো শিক্ষার ক্ষেত্রে সাম্য। বার্কার (Barker)-এর মতে, "রাষ্ট্র শিক্ষার ক্ষেত্রে ন্যূনতম অধিকার প্রদান করেছে। বর্তমান রাষ্ট্রে প্রাথমিক শিক্ষাকে সকলের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। উন্নত গুণাবলি প্রমাণের জন্য উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও প্রবেশাধিকার সম্প্রসারিত করা হয়েছে।"

সাম্য ভিত্তিক সমাজ ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য অপরিহার্য। উল্লিখিত বিভিন্ন সাম্য ব্যবস্থার সফল বাস্তবায়ন সম্ভব হলে সমাজ যেমন সমৃদ্ধ হবে তেমনি ব্যক্তির উৎকর্ষও সাধিত হবে। সাম্যের সফল বাস্তবায়ন আর ব্যক্তিত্বের উৎকর্ষ- এ দুয়ের সংমিশ্রণে সমাজ ও দেশ হয়ে উঠবে সমৃদ্ধ।

সমাজ জীবনে সাম্যের গুরুত্ব (Importance of equality in social life)

সমাজ জীবনে সাম্যের গুরুত্ব অপরিসীম। সুখ-সমৃদ্ধ জীবনের জন্য সাম্য ভিত্তিক সমাজ অপরিহার্য। নিচে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করা হলো:

১. সভ্য সমাজের প্রতিষ্ঠায় সাম্যের মাধ্যমেই সভ্য সমাজব্যবস্থা বিকশিত হয়। কারণ সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠিত হলে সমাজের সকল শ্রেণির মানুষ সমান অধিকার উপভোগের সুযোগ লাভ করে। সাম্য বর্ণবৈষম্য বা সাংস্কৃতিক বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠন করে সমাজ সুন্দর করে তোলে।

২. শ্রেণিহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায়: একমাত্র সাম্য ব্যবস্থাই পারে শ্রেণিহীন সমাজ গড়ে তুলতে। যেখানে ধনী-গরিব, উঁচু-নিচু, রাজা-প্রজা, মালিক-শ্রমিক ইত্যাদি শ্রেণিভেদের অস্তিত্ব থাকে না।

৩. গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠায় গণতান্ত্রিক সমাজ বলতে সমতা ভিত্তিক সমাজকেই বোঝায়। কারণ গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা বিশেষ মহলের জন্য বিশেষ কোনো সুযোগ-সুবিধা লাভের সুযোগ থাকে না। তাই গণতন্ত্রকে অর্থবহ করে তোলার জন্য সাম্যের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

৪. অর্থনৈতিক স্বাধীনতা রক্ষায় সাম্য ব্যবস্থা সমাজে কাউকে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলার সুযোগ দেয় না বা কাউকে একেবারে দারিদ্র্যের শিকার হতে দেয় না। সম্পদের সুষম বণ্টনের মাধ্যমে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য রোধ করে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সকলের সমান স্বাধীনতাকে নিশ্চিত করতে সাম্যের গুরুত্ব খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।

৫. সমৃদ্ধ সমাজ গঠনে সমৃদ্ধ সমাজ বলতে সকলের সুখ-সমৃদ্ধিশীল জীবন ব্যবস্থাকে বোঝায়। আর এরূপ সমাজের রূপায়ণে সাম্য অপরিহার্য। সাম্য ভিত্তিক সমাজে সকলের সুখ-সমৃদ্ধ জীবন নিশ্চিত করা সম্ভব।

৬. ব্যক্তির স্বাধীনতা রক্ষায় ব্যক্তির স্বাধীনতা রক্ষায় সাম্যের গুরুত্ব অপরিসীম। সমাজে অসাম্য বিরাজ করলে সবল বা সম্পদশালী ব্যক্তিরা দুর্বল ব্যক্তিদের ওপর প্রভাব বিস্তার করবে। এক্ষেত্রে দুর্বল ব্যক্তিদের পক্ষে স্বাধীনতা বজায় রাখা সম্ভব হবে না। কিন্তু সমাজে সাম্য বিরাজ করলে কেউ কারো ওপর হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।

৭. সামাজিক বৈষম্য রোধ সমাজে সুশাসন না থাকলে ধন-বৈষম্য দেখা দেবে। এক্ষেত্রে বিত্তশালীরা বিলাসী জীবনযাপন করবে আর নিম্নবিত্তরা দুঃখ-কষ্টের মধ্যে জীবনযাপন করবে। তাই আয় ও বণ্টনের ক্ষেত্রে সমতা বিরাজ করলে সামাজিক বৈষম্য রোধ সম্ভব হবে।

৮. সামাজিক শান্তি ও সংহতি রক্ষা সমতা ছাড়া সমাজে শাস্তি ও সংহতি রক্ষা করা সম্ভব নয়। সাম্য সামাজিক অশান্তি দৃঢ় করে সমাজে শান্তি সৃষ্টি করতে পারে। সামাজিক বন্ধন ও। ন ও সংহতি জোরদার হবে। তাই সামাজিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় সাম্যের গুরুত্ব অপরিসীম।

উপর্যুক্ত আলোচনার নিরিখে প্রতীয়মান হয় যে, সমাজের সকল মানুষের মানবিক সত্তার বিকাশ এবং সেইসাথে সুখ-সমৃদ্ধ জীবন উপভোগের জন্য সাম্যের গুরুত্ব অপরিসীম। এজন্য সাম্য ভিত্তিক সমাজ সকলেরই একান্ত কাম্য।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ