- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
রাজনৈতিক দল, নেতৃত্ব ও সুশাসন
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
রাজনৈতিক দল, নেতৃত্ব ও সুশাসন
বহুদলীয় ব্যবস্থার অসুবিধা বা দোষ-ত্রুটিসমূহ Demerits of Multi-party System
বহুদলীয় ব্যবস্থার সুবিধাগুলোর বিপরীতে নিম্নোক্ত অসুবিধাগুলোকে এড়িয়ে যাওয়া যায় না:
১. ক্ষণস্থায়ী সরকার বহুদলীয় ব্যবস্থায় সরকার সাধারণত ক্ষণস্থায়ী হয়। কারণ সরকার একতরফা নীতি গ্রহণ করলে বা বিরোধীদের মতামতকে গুরুত্ব না দিলে সরকার পতনের আন্দোলন দেখা দেয়। অন্যদিকে, সরকার আইনসভার সংখ্যাগরিষ্ঠের আস্থা হারালে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই পদত্যাগ করতে বাধ্য থাকে।
২. দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাব: এ ব্যবস্থায় সরকার ক্ষণস্থায়ী হওয়ায় সরকারের পক্ষে কোনো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন সম্ভব হয় না। ফলে দেশ ও জাতির টেকসই উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
৩. নতুন সরকার গঠনে অনিশ্চয়তা বহুদলীয় ব্যবস্থায় দলগুলো ঘন ঘন সরকারের পক্ষে ও বিপক্ষে অবস্থান নেয়। এতে গঠনমূলক কোনো বিরোধী পক্ষ গড়ে ওঠে না এবং সরকারের পতন ঘটলে নতুন সরকার গঠনে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।
৪. দুর্নীতির প্রসার: বহুদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য দলীয় কর্মীদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে এবং স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন সরকারি গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকরি দেয়। এতে দুর্নীতির ব্যাপক প্রসার ঘটে।
৫. অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি বহুদলীয় ব্যবস্থার বড় দোষ হলো- এতে সর্বদাই রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বিরাজ করে। ফলে সরকারের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে ব্যাঘাত ঘটে এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ব্যাহত হয়।
৬. নির্বাচনে জটিলতা সৃষ্টি: বহুদলীয় ব্যবস্থায় সাধারণ নির্বাচনে বহুসংখ্যক রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে। বহুদলের নীতি ও প্রার্থীর মধ্য থেকে পছন্দের দল ও প্রার্থী বাছাই করা জনগণের জন্য অসম্ভব হয়ে পড়ে।
৭. অন্তর্দ্বন্দ্ব: বহুদলীয় ব্যবস্থার আরেকটি বড় অসুবিধা হলো দলগুলোর মধ্যে অবিরাম অন্তর্দ্বন্দ্ব। এরূপ অন্তর্দ্বন্দ্বের ফলে রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ফলে সর্বদাই একটা উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করে।
৮. আমলাতন্ত্রের প্রাধান্য সাধারণত বহুদলীয় ব্যবস্থায় সাধারণ নির্বাচনে অযোগ্য ও অনভিজ্ঞ প্রার্থীগণ আইনসভায় নির্বাচিত হয়ে আসে। ফলে প্রশাসনিক অনভিজ্ঞতার জন্য তারা আমলানির্ভর হয়ে ওঠে এবং আমলারাও এ সুবাদে প্রাধান্য বিস্তার করে।
উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় বহুদলীয় ব্যবস্থা অবশ্যই কাম্য। তবে দলগুলোকে অবশ্যই সুগঠিত হওয়া বাঞ্ছনীয়, যাতে প্রত্যেক দলের মধ্যেই সর্বশ্রেণির লোকের স্বার্থের গ্রন্থিকরণ ঘটে। তবেই জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষিত হবে, নাগরিকের অধিকার রক্ষা পাবে এবং দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ