- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
জনমত ও রাজনৈতিক সংস্কৃতি
রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে জনমতের প্রভাব ture Importance of Public Opinion in Political Culture
যে দেশের জনগণ উন্নত রাজনৈতিক সংস্কৃতি ধারণ করে সে দেশের জনমত অত্যন্ত সুগঠিত এবং সৃদৃঢ় হয়। আর এজন্য এটা সুস্পষ্ট যে, রাজনৈতিক সংস্কৃতির গতিপ্রকৃতির উপর জনমতের গতিপ্রকৃতি অনেকাংশে নির্ভরশীল। বিচ্ছিন্ন-বিশৃঙ্খল এবং অসংগঠিত জনমতকে সুশৃঙ্খল, সুসংঘবদ্ধ এবং সুসংগঠিত করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সংস্কৃতির ভূমিকা অনস্বীকার্য। সুদৃঢ় এবং সুচিন্তিত জনমতের পেছনে উন্নত রাজনৈতিক সংস্কৃতির বলিষ্ঠ ভূমিকা রয়েছে।
রাজনৈতিক সংস্কৃতির ওপর জনমতের প্রভাব অপরিসীম। জনমত যেভাবে চায়, সেভাবেই রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে ওঠে। জনমতের ওপরই একটি সুন্দর মূল্যবোধসম্পন্ন অনুকরণীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে ওঠে। সে দেশের মানুষ সুস্থ, সুন্দর উন্নত জীবনের জন্য প্রচণ্ড পরিশ্রমসহ জাতি গঠনের সকল কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে। রাজনৈতিক নেতৃত্বও সেভাবেই জনগণের পাশে দাঁড়ায়। সেক্ষেত্রে জনস্বার্থের কথা বিবেচনায় রেখে রাজনৈতিক নেতৃত্বও স্বার্থপরতা, দুর্নীতি ও স্বজপ্রীতির মতো নেতিবাচক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থেকে জনকল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত করেন। এভাবে জনমত সুস্থ রাজনৈতিক ধারার প্রবর্তনে কাজ করে।
জনমতের মাধ্যমেই রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিকশিত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, গ্রেটব্রিটেন প্রভৃতি দেশে উন্নত রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিলক্ষিত হয়। এসব দেশে সরকারি দল ও বিরোধী দল পরস্পরের প্রতি সবসময় সু-সম্পর্ক বজায় রাখে। নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা কখনোই সহিংসতা, অপ-প্রচার, নোংরামীতে পরিণত হতে পারে না। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের জনগণ রাজনীতিতে এসব দেখতে চায় না, সমর্থন করে না। তাই এখানে সব দলই অবাধে তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে। সাধারণ মানুষ নিজ মতামত প্রকাশের পাশাপাশি অন্যের মতামত প্রকাশের সুযোগ দিতে কার্পণ্য করে না। তারা রাজনীতির নামে দলাদলি, হানাহানি বা হরতাল, অবরোধের মতো জাতির জন্য ক্ষতিকর কর্মসূচি পছন্দ করে না বলেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ব্রিটেনের মতো দেশে উন্নত, সহনশীল, উন্নয়নমুখী রাজনৈতিক সংস্কৃতি লক্ষ করা যায়।
তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল অনেক দেশেই গণতন্ত্র তথা রাজনীতির নামে হানাহানি, বিরোধ, সহিংসতা প্রায়শই লক্ষ করা যায়। জনগণের একটা অংশ বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে এসব নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে নিজেদের সম্পৃক্ত করে। রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রকাশ্যে হোক না অপ্রকাশ্যে হোক এসব কর্মকাণ্ডে মদদ দিয়ে থাকে। জনগণ যদি এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয় অর্থাৎ জনমত বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে, তবে তা বন্ধ হতে বাধ্য। জনমত শান্তি ও উন্নয়নের পক্ষে মত দেয় বলে এসব কর্মকাণ্ড দীর্ঘদিন স্থায়ী হয় না। তাই আমরা সহজ ভাষায় বলতে পারি, জনমত যেভাবে চায় রাজনৈতিক সংস্কৃতি সেভাবেই গড়ে ওঠে।
অতএব বলা যায়, যে দেশে জনমত যত বেশি শক্তিশালী, রাজনৈতিক সংস্কৃতি তত বেশি উন্নত। জনমত যেমন- রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করে, তেমনি উন্নত রাজনৈতিক সংস্কৃতি শক্তিশালী ও যুক্তিসঙ্গত জনমত গঠনেও সাহায্য করে।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ