- হোম
- স্কুল ১-১২
- সাধারণ
- অষ্টম শ্রেণি
প্রবন্ধ রচনা
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
প্রবন্ধ রচনা
একটি দিনলিপি
ভূমিকা: আমি শ্রুতি রহমান। প্রতিদিনের দিনলিপি ডায়েরি লেখা আমার স্বভাব। অনেক ছোটবেলা থেকে আমি প্রতিদিনের সকল কাজের কথা ডায়েরিতে লিখে রাখি। ক্লাশ ওয়ানে যখন পড়ি তখন আমার মা আমাকে ডায়েরি লেখার কথা বুঝিয়ে বলেছিলেন। আমার মায়ের মুখে সে কথা শুনে আমি আজো প্রতিদিনের দিনলিপি লিপিবদ্ধ করে রাখি। আজ সারাটা দিন আমি কি কি করেছি তা আমি দিনলিপির ডায়েরিতে এখন লিখছি।
আমার আজকের দিনলিপি আজ আমি অন্যান্য দিনের ন্যায় খুব ভোরে উঠেছি। সকাল ৫.৩০ থেকে ৬.০০ মিনিটে আমি ঘুম থেকে উঠি। আজও ঘুম থেকে উঠে আমি দাঁত ব্রাশ করে অজু করি। নামাযটা পড়ে বাড়ির ছাদে কিছু হাঁটাহাঁটি করি। সকালের নির্মল বাতাসে শরীর ও মন খুব সতেজ থাকে। ৬.৩০ মধ্যে আমি ঘরে ফিরে সকালের নাস্তা সেরে নিই। আর ডাইনিং টেবিলে বসে বসে নাস্তা খেতে খেতে ভাবতে থাকি স্কুলের হোম ওয়ার্ক সম্পন্ন হয়েছে কি না। কিংবা অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে কি না। নাস্তা সেরে আমি আমার রুমে এসে পড়ার টেবিলে চোখ রাখি।
ক্লাসের বই খাতাগুলো গুছিয়ে নিই। স্কুলের হোম ওয়ার্কগুলো আবারও পর্যবেক্ষণ করি। স্কুলের ব্যাগে বই, খাতা, পেন্সিল, কলমসহ স্কুলের ব্যবহৃত জিনিসগুলো আমি গুছিয়ে তুলে নিই। এছাড়া আমি প্রতিদিনই ৩ পৃষ্ঠা বাংলা হাতের লেখা এবং ৩ পৃষ্ঠা ইংরেজি হাতের লেখা চর্চা করি। আমার বাবা-মা এ ব্যাপারে আমাকে ছোটবেলা থেকেই অভ্যাস করিয়েছিলেন। কারণ তাতে হাতের লেখা সুন্দর হয়ে থাকে। আমি সকাল ৭.৩০ থেকে ৮.৩০ মিনিটের মধ্যে আমার পড়া ও হাতের লেখা সম্পন্ন করে মায়ের সাথে রান্নার কাজে সহযোগিতা করি।
তবে মাঝে মধ্যে কিছু সময়ের জন্য টিভিতে মুভি বা ভালো কোনো অনুষ্ঠান হলে দেখি। এভাবে ৯.০০ বা ৯.৩০ মিনিটের মধ্যে আমি গোসল সেরে নেই, ১০.৩০ থেকে ১১.০০ টার মধ্যে আমি স্কুলের ড্রেস পড়ে নিই। ১১.৩০ মিনিটের মধ্যে আমি দুপুরের খাবার খেয়ে দুপুর ১২.০০ মধ্যে স্কুলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যাই। স্কুলে বিকেল ৫.০০ পর্যন্ত ক্লাস ও শ্রেণির অধ্যবসায় চলে। ৫.৩০-মিনিটে আমি বাসায় এসে স্কুল ড্রেস ছেড়ে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে নিই। এর মধ্যে মা আমাকে বিকেলের খাবার এনে দেন। আমি তা খেতে খেতে মার সাথে গল্প করি।
আমার বাবাও আমাদের সাথে বন্ধুর মতো আচরণ করেন। তাই বাবাও আমাদের গল্পে এসে যোগ দেন। এর মধ্যেই আমি আসরের নামায সেরে ফেলি। তবে জোহরের নামায আমি স্কুলে পড়ে নিই। স্কুলে নামায পড়ার আলাদা রুম রয়েছে। সন্ধ্যার সময় আমি আমার হোমওয়ার্ক করে নিই। রাত ৮.০০ থেকে ৮.৩০ মিনিটের মধ্যে আমি স্কুলের পড়া সম্পন্ন করে রাতের খাবার খেতে ডাইনিংয়ে যাই। সেখানে বাবা, আমি, দাদু ও আম্মু সবাই মিলে রাতের খাবার খেয়ে নিই।
মাঝে মাঝে খাবার খেতে খেতে সারাদিনের নানা ধরনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করি। তখন খুব ভালো লাগে আমার। এভাবে রাত ৯.০০ মিনিটের সময় টেলিভিশনের খবর দেখতে যাই। বাবা-আম্মুও আমার সাথে টেলিভিশনের খবর ছাড়াও অন্যান্য কোনো ভালো অনুষ্ঠান দেখেন। আমি ১০.৩০ মিনিটের মধ্যে আমার রুমে ঘুমাতে চলে আসি। কারণ অনেক ভোরে উঠতে এহয়। আজ সারাটা দিন আমার এভাবেই কেটেছে। এখানে বলা প্রয়োজন যে, আমার আব্বু-আম্মু সময় পেলে আমাকে বিকেলে বেড়াতে নিয়ে যান। কখনো কখনো আমরা বাইরে খেতে যাই। কিংবা শপিং করি। যদিও আজ আমি কোথাও যাই নি। আমার বাবা-মা দুজনেই উচ্চশিক্ষিত এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। তাই তাঁদেরকে আমি আমার আদর্শ বলে জানি। তাঁরা আমার জীবন গড়ে তুলতে যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন তা আমি সব সময় পালন করতে সচেষ্ট থাকি।
উপসংহার: প্রতিটি মানুষের জীবনেই একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকে। আমার জীবনেও রয়েছে সেই লক্ষ্যটি। আমি একজন সৎ ও পরিশ্রমী নাগরিক হয়ে এদেশের উন্নতির কাজে লাগতে চাই। তাই এই লক্ষ্যে আমার জীবনকে একটি সুন্দর ও পবিত্র আদর্শে গড়ে তুলতে সচেষ্ট হয়েছি। আর এই বিষয়টি স্মৃতির পাতায় ধরে রাখতে প্রতিদিনের কার্যক্রম ডায়েরির দিনলিপিতে বিস্তারিতভাবে লিখে রাখছি। জীবনকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে এই দিনলিপির ডায়েরিটির তাৎপর্য রয়েছে বলে আমি বিশ্বাস করি।