- হোম
- স্কুল ১-১২
- সাধারণ
- অষ্টম শ্রেণি
প্রবন্ধ রচনা
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
প্রবন্ধ রচনা
চা শিল্প
ভূমিকা: সুস্বাদু পানীয় হিসেবে চা আধুনিক যুগের অন্যতম ও জনপ্রিয় পানীয়। পৃথিবীর প্রায় সব দেশের জনগণই চা পান করে থাকে। বাংলাদেশের চা-পানের প্রচলন তেমন ছিল না। এশিয়া মহাদেশের অন্তর্গত চীন দেশে এর ব্যবহার প্রথমে শুরু হয়েছিল। পরে চা আমাদের দেশে আমদানি করা হয়।
উৎপন্ন স্থল: বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম ও সিলেট জেলায় প্রচুর চা চাষ করা হয়। বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি পাউন্ড চা উৎপন্ন হয় বলে জানা যায়।
চা-চাষ প্রণালি: চা-চাষ করতে হলে জমিকে উর্বর করে নিতে হয়। চৈত্র-বৈশাখ মাসে চায়ের বীজ ছড়াতে হয়। চায়ের চারা গজালে তা কয়েকদিন পর ছেঁটে দিতে হয়। পরবর্তীকালে নতুন পাতা গজালে তা সংগ্রহ করা হয়। চায়ের এ গাছ থেকে অনেক দিন পাতা সংগ্রহ করা যায়। চা গাছ ৩/৪ হাত লম্বা হতে পারে। তবে বেশি লম্বা হলে চা-পাতা তেমন গজায় না। তাই ২/৩ হাতের বেশি লম্বা হলে এর মাথা ছেঁটে দেওয়া হয়। চা-গাছের জন্য পানি বিশেষভাবে উপকারী। এতে পানি সেচন করে দেওয়া হয়ে থাকে।
চা-পাতা সংগ্রহ: চা-পাতা সংগ্রহ করা অত্যন্ত আনন্দদায়ক একটি বিষয়। চা-চাষ এলাকায় স্ত্রী-পুরুষ দলবেঁধে পিঠে ঝুড়ি আটকিয়ে আনন্দের সঙ্গে চা-পাতা সংগ্রহ করে। বছরে চারবার চা-পাতা সংগ্রহ করা যায়। চা-পাতা সংগ্রহের পর তা বাতাসে শুকাতে হয়। পরে চা-পাতা ভাঙার যন্ত্র দিয়ে তা গুঁড়ো করে গুদামঘরে আবদ্ধ করে রাখতে হয়। এর কিছুদিন পর চা চালুনি দিয়ে ছেঁকে বিভিন্ন প্রকারের চা ভাগ করে বিক্রির জন্য প্রেরণ করা হয়। এভাবে চা-পাতা সংগ্রহের কাজটি করা হয়।
চা-পানের উপকারিতা: সাধারণ ও মুখরোচক পানীয় হিসেবে চা বর্তমানকালে বিশ্বের সর্বত্র ব্যবহার হয়ে চলেছে। চা-পান করার ফলে দেহের জড়তা, রাত্রি জাগরণ ও সর্দি-কাশিতে উপশম ও স্বস্তিবোধ হয়। অর্থাৎ চা-পানে শ্রমক্লান্তি দূর হয়। আর এ কারণে কল ও মিল-কারখানার শ্রমিকরা ঘন ঘন চা-পান করে। চা-পানে সাময়িকভাবে স্নায়ুর মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় বলে তা সামান্য পরিমাণে শরীরে শক্তি আনয়ন করে।
চা-পানের অপকারিতা: চা-পানের অপকারিতা রয়েছে। অধিক চা-পানে শরীরের ক্ষতিসাধন হয়। খালি পেটে চা-পান করলে গ্যাসট্রিক আলসার হয়ে থাকে। আবার চা অনেকের ক্ষুধা নাশ করে। চা-পানে অনেকে অনিদ্রায় ভোগে। এভাবে চা পানের উপকারিতার পাশাপাশি এর অপকারিতাও রয়েছে।
উপসংহার: বাংলাদেশের জনগণের কাছে চা পান করা একটি অন্যতম অভ্যাস হয়ে পড়েছে। এটি বর্তমানকালে জনপ্রিয় পানীয় হিসেবে গণ্য। চা চাষ করে বিদেশে রপ্তানি করে অধিক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায়। চা বাগানে কাজ করে অনেক শ্রমিক তাদের জীবিকা নির্বাহ করে চলেছে। তাই চা চাষ করা এবং চা শিল্পের প্রতি যত্নবান হওয়া প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য বলে মনে করা হয়।