- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
সরকার কাঠামো ও সরকারের অঙ্গসমূহ
যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Federal Form of Government)
আধুনিক সরকারের শ্রেণিবিভাগের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা অন্যতম। এ সরকারের সংজ্ঞা ও প্রকৃতি বিশ্লেষণ করলে এর কতকগুলো বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়। নিম্নে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের বৈশিষ্ট্যসমূহ তুলে ধরা হলো:
১. যুক্তরাষ্ট্রীয় মনোভাব যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার ব্যবস্থায় কেন্দ্রমুখী ও কেন্দ্রবিমুখী এ দু ধরনের বিপরীতমুখী প্রবণতা দেখা যায়। এই ব্যবস্থায় প্রদেশ বা অঙ্গরাষ্ট্রগুলো জাতীয় ঐক্য চায় কিন্তু এক হয়ে মিশে যেতে চায় না। তবে প্রদেশগুলো কতিপয় সাধারণ বিষয়ে একটা ঐকমত্য সৃষ্টি করে। অন্যদিকে প্রদেশগুলো স্বায়ত্তশাসন ভোগ করতে চায়। একেই "যুক্তরাষ্ট্রীয় মনোভাব" (Federal Sentiment) বলে।
২. সংবিধানের প্রাধান্য যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারে সংবিধানের প্রাধান্য স্বীকার করা হয়। জাতীয় বা কেন্দ্রীয় এবং আঞ্চলিক বা প্রাদেশিক সরকার সংবিধানের বিধান অনুযায়ী শাসন কাজ পরিচালনা করে। এ ব্যবস্থায় সংবিধানই দেশের সর্বোচ্চ আইন।
৩. দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান যুক্তরাষ্ট্রে সংবিধান দুষ্পরিবর্তনীয় হওয়াই বাঞ্ছনীয়। কেননা সংবিধান দুষ্পরিবর্তনীয় হওয়ার ফলে এর কোনো ধারা পরিবর্তন করে কেউ ক্ষুদ্র স্বার্থসিদ্ধি করতে পারে না'।
৪. দুই ধরনের সরকার: যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার ব্যবস্থায় কেন্দ্র ও প্রাদেশিক এই দু'ধরনের সরকার বিদ্যমান থাকে। তবে প্রত্যেক সরকারই স্ব-স্ব এলাকায় স্বাধীন থাকে।
৫. দ্বৈত নাগরিকত্ব: যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার ব্যবস্থায় দ্বৈত নাগরিকতা বিদ্যমান। প্রথমত। নাগরিক; দ্বিতীয়ত তারা যুক্তরাষ্ট্রীয় বা ফেডারেল রাষ্ট্রের নাগরিক। তারা নিজ নিজ প্রদেশ বা অঙ্গরাজ্যের
৬. দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভা: যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় আইনসভা দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট হয়। নিম্নকক্ষ সমগ্র জাতির প্রতিনিধিত্ব করে এবং উচ্চকক্ষ সাধারণ প্রদেশ বা অঙ্গরাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করে।
৭. লিখিত সংবিধান যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের সংবিধান লিখিত। কেননা এ সংবিধানে অঙ্গরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্ষমতা লিখিতভাবে বণ্টন করা থাকে বিধায় কেউ কারও ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।
৮. ক্ষমতা বণ্টন: যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় সংবিধান কর্তৃক কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারের মধ্যে ক্ষমতা বণ্টন করা হয়। ফলে মুদ্রা, বৈদেশিক সম্পর্ক, দেশরক্ষা প্রভৃতি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে ন্যস্ত থাকে। আর বাদবাকি বিষয়গুলো প্রাদেশিক সরকারের হাতে অর্পণ করা হয়।
৯. বিচার বিভাগের প্রাধান্য: যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালত বা সুপ্রিম কোর্টই সংবিধানের অভিভাবক, রক্ষক ও ব্যাখ্যাকর্তা। সংবিধানের প্রাধান্য স্বীকৃত ও প্রতিপালিত হচ্ছে কি না তা দেখার দায়িত্ব সুপ্রিম কোর্ট বা ফেডারেল কোর্টের উপর ন্যস্ত থাকে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় বিচার বিভাগের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
১০. প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় প্রদেশ বা অঙ্গরাষ্ট্রগুলো স্বায়ত্তশাসনের অধিকারী হয়। ফলে নিজ নিজ প্রদেশ বা অঙ্গরাষ্ট্র পরিচালনায় তারা সংবিধানের আলোকে অনেকটা স্বাধীনতা ভোগ করে থাকে।
১১. সংবিধানের রক্ষক হিসেবে বিচার বিভাগ যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় সংবিধানের ব্যাখ্যা নিয়ে কেন্দ্র ও প্রদেশের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে বিচার বিভাগ যে ব্যাখ্যা প্রদান করে সেটাকেই প্রামাণ্য ব্যাখ্যা বলে গ্রহণ করা হয়। কেননা এ ব্যবস্থায় বিচার বিভাগ হচ্ছে সংবিধানের রক্ষক ও অভিভাবক।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ