• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
ব্রিটিশ ভারতে প্রতিনিধিত্বশীল

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

ব্রিটিশ ভারতে প্রতিনিধিত্বশীল

মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব

মুসলিম লীগ ভারতবর্ষের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এ দলটি ভারতবর্ষের ভাগ্যবিড়ম্বিত মুসলমান জাতির স্বার্থ রক্ষার জন্য কাজ করে গেছে। নিম্নে মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব আলোচনা করা হলো:

১. রাজনৈতিক সচেতনতা সৃষ্টি: মুসলিম লীগ মুসলমানদের মধ্যে ব্যাপক রাজনৈতিক চেতনা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়। রাজনৈতিক শিক্ষার সূতিকাগার হিসেবে বিবেচিত মুসলিম লীগের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য মুসলমানদের মধ্যে ব্যাপক আশার সঞ্চার করে। মুসলিম লীগ ব্রিটিশ সরকারের নিকট মুসলমানদের স্বার্থরক্ষায় বহু দাবিদাওয়া পেশ করে।

২. সর্বভারতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ভারতের মুসলিম সম্প্রদায় সর্বভারতীয় রাজনীতিতে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি করে। ফলে মুসলমানদের মধ্যে রাজনৈতিক বিষয়ে আগ্রহ যেমন বহুগুণ বেড়ে যায় তেমনি সৃষ্টি হয় রাজনৈতিক সচেতনতা। মূলত মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকে ভারতের মুসলমানরা একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক সংগঠনের মাধ্যমে নিজেদের সংগঠিত করে তোলে এবং বিভিন্ন দাবি-দফা উত্থাপনের সুযোগ লাভ করে।

৩. মুসলমানদের জন্য পৃথক নির্বাচন: ১৯০৬ সালে মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার পর আইনসভায় মুসলমানদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে পৃথক নির্বাচন দাবি করে। কেননা, নির্বাচন ব্যবস্থা যৌথভাবে হওয়ার কারণে মুসলমানদের পক্ষে জয়লাভ করা ছিল প্রায় অসম্ভব। মুসলিম লীগের দাবির প্রেক্ষিতে তাই ব্রিটিশ সরকার ১৯০৯ সালের মর্লে-মিন্টো সংস্কার আইনে মুসলমানদের জন্য পৃথক নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে। ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক মুসলমানদের জন্য পৃথক নির্বাচনের ব্যবস্থা করা ছিল ভারতীয় উপমহদেশের রাজনীতিতে মুসলিম লীগের একটি বড় অর্জন।

৪. বঙ্গভঙ্গ রক্ষায় ভূমিকা: ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ হলে কলকাতায় বসবাসকারী হিন্দু জমিদার ও একশ্রেণির রক্ষণশীল হিন্দু নেতা এর বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন। এ সময় মুসলিম লীগ নেতৃবৃন্দ বঙ্গভঙ্গকে বহাল রাখার জন্য ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলেন। যদিও তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু এবং কংগ্রেসের বিরোধিতার কারণে বঙ্গভঙ্গকে রক্ষা করতে পারেন নি, তবুও এ আন্দোলন ছিল ভারতীয় মুসলমানদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ পাথেয় স্বরূপ।

৫. লাহোর প্রস্তাব প্রণয়নে ভূমিকা লাহোর প্রস্তাব প্রণয়নে মুসলিম লীগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ মুসলিম লীগের লাহোর অধিবেশনে ভারতের উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলসমূহে 'স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহ' প্রতিষ্ঠার একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। এটি লাহোর প্রস্তাব নামে পরিচিত। এ প্রস্তাব ব্রিটিশ ভারতের সাংবিধানিক অগ্রগতি এবং মুসলমানদের জন্য একটি পৃথক আবাসভূমির দাবি উত্থাপনের ক্ষেত্রে এক অনন্য সাধারণ সাংবিধানিক ঘটনা।

৬. পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি: ১৯০৬ সালে মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা ভারতীয় মুসলিম জাতীয়তাবাদের ইতিহাসে এক নব অধ্যায়ের সূচনা করে। মুসলমানদের ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ দূর করা এবং তাদের অভাব-অভিযোগ অত্যন্ত বিনয়ের সাথে ব্রিটিশ সরকারের নিকট জানানোর জন্যই মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করা হয়। অতি অল্প সময়ের মধ্যেই মুসলিম লীগ মুসলমানদের আশা-আকাঙ্ক্ষার মূর্ত প্রতীক হিসেবে আবির্ভূত হয়। চূড়ান্ত পর্যায়ে মুসলিম লীগের নেতৃত্বেই ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ