- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
ব্রিটিশ ভারতে প্রতিনিধিত্বশীল
খিলাফত আন্দোলন
ভারতীয় উপমহাদেশে জাতীয়তাবাদের বিকাশে খিলাফত আন্দোলনের ভূমিকা অপরিসীম। ১৯১৮ সালে প্রথম মহাযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটলে তুরস্কের খিলাফত রক্ষার জন্য ভারতীয় মুসলমানরা যে আন্দোলন শুরু করেন, তাই ইতিহাসে খিলাফত আন্দোলন নামে পরিচিত। মাওলানা মোহাম্মদ আলী, মাওলানা শওকত আলী, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ এ আন্দোলনের নেতৃত্ব প্রদান করেন।
প্রথম মহাযুদ্ধে তুরস্ক ব্রিটিশদের বিপক্ষে জার্মানির নেতৃত্বাধীন অক্ষশক্তির পক্ষে অংশ নেয়। অন্যদিকে ভারতীয় মুসলমানরা ব্রিটিশ সরকারকে সমর্থন জানায়। প্রথম মহাযুদ্ধে জার্মানি পরাজিত হলে ভারতীয় মুসলমানরা তুরস্ক খিলাফত না ভাঙার দাবি জানায়। ব্রিটিশ সরকার প্রথমে কথা দিলেও পরবর্তীতে প্যারিস চুক্তির মাধ্যমে তুরস্ক খিলাফত ভেঙে দেয়। প্রতিশ্রুতি ভঙের প্রতিবাদে ও তুরস্ক খিলাফত অক্ষুন্ন রাখার দাবিতে মুসলমানরা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন।
খিলাফত আন্দোলন চলাকালীন সময়ে মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের 'অহিংস অসহযোগ আন্দোলন' শুরু হয়। গান্ধীজী খিলাফত আন্দোলনের প্রতিও তাঁর সমর্থন জ্ঞাপন করেন। এর ফলে খিলাফত আন্দোলন আরও তীব্র হয়ে ওঠে। গান্ধীজী খিলাফত আন্দোলনেরও অন্যতম প্রধান নেতায় পরিণত হন। ১৯২১ সালের ৫ নভেম্বর কংগ্রেস 'আইন অমান্য আন্দোলন' শুরু করলে অহিংস আন্দোলন দ্রুত সহিংস রূপ ধারণ করতে থাকে। গান্ধীজী আন্দোলনের এ সহিংস রূপ দেখে মর্মাহত হন এবং আকস্মিকভাবে তাঁর একক সিদ্ধান্তে ১৯২২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
এ সময় তুরস্কের বিপ্লবী নেতা মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক তুরস্কের ক্ষমতা দখল করেন। ১৯২৩ সালের ১৭ নভেম্বর তিনি তুরস্ককে 'প্রজাতন্ত্র' ঘোষণা এবং 'খিলাফত' তথা 'তুরস্ক সালতানাতকে' বাতিল ঘোষণা করেন। এর ফলে ১৯২৪ সালে ভারতে খিলাফত আন্দোলনের পরিসমাপ্তি ঘটে।
খিলাফত আন্দোলন ছিল ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এ আন্দোলনের ফলে ভারতীয় মুসলমানদের মধ্যে রাজনৈতিক চেতনার বিকাশ ঘটে এবং মুসলমানরা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার শিক্ষা গ্রহণ করেন।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ