- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
ব্রিটিশ ভারতে প্রতিনিধিত্বশীল
ভারত শাসন আইন, ১৯৩৫
ব্রিটিশ ভারতের সাংবিধানিক অগ্রগতির ইতিহাসে ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন বিশেষ স্থান দখল করে আছে। ভারতবর্ষের স্বাধীনতা অর্জনের সুদীর্ঘ যাত্রাপথে এ আইনকে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে গণ্য করা হয়। ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের ওপর ভিত্তি করেই পরবর্তীতে ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা আইন প্রণীত হয়।
১৯১৯ সালের ভারত শাসন আইন ভারতীয়দের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে নি। তাই এ আইনের কার্যকারিতা পর্যালোচনা এবং ভারতের জন্য ভবিষ্যৎ সংবিধান সম্পর্কে সুপারিশ পেশের দায়িত্ব অর্পণ করে ব্রিটিশ সরকার ১৯২৭ সালে স্যার জন সাইমনের (Sir John Simon) নেতৃত্বে ৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিশন গঠন করে, যা 'সাইমন কমিশন' নামে পরিচিত। এ কমিশনে কোনো ভারতীয় সদস্য না থাকায় ভারতীয় নেতৃবর্গ একে All-white Commission বা 'শ্বেতাঙ্গ কমিশন' নামে অভিহিত করে। কিন্তু সাইমন কমিশনের রিপোর্ট কংগ্রেস বা মুসলিম লীগ কোনো দলই গ্রহণ করে নি। অধিকন্তু, কংগ্রেস পণ্ডিত মতিলাল নেহেরুকে সভাপতি করে ভারতের জন্য একটি সংবিধানের রূপরেখা প্রণয়নের উদ্দেশ্যে একটি কমিটি গঠন করে। এ কমিটি ১৯২৮ সালের আগস্ট মাসে একটি রিপোর্টও পেশ করে, যা 'নেহেরু রিপোর্ট' ন পরিচিত। কিন্তু এ রিপোর্টে মুসলমানদের দাবি পূরণ না হওয়ায় মুসলিম নেতৃবৃন্দ তা প্রত্যাখ্যান করেন।
১৯২৯ সালে মুসলিম লীগের পক্ষ থেকে জিন্নাহ তাঁর 'চৌদ্দ দফা' কর্মসূচি পেশ করেন। নেহেরু রিপোর্ট এবং চৌদ্দ দফা প্রকাশিত হলে ভারতবর্ষে শাসনতান্ত্রিক অচলাবস্থা ও সংকট সৃষ্টি হয়। তাছাড়া ১৯৩০ সাল থেকে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে গান্ধীর 'আইন অমান্য আন্দোলন' শুরু হয়। এ অবস্থায় ভারতের শাসনতান্ত্রিক সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে ব্রিটিশ সরকার ১৯৩০-৩২ সালের মধ্যে পর পর তিনটি গোলটেবিল বৈঠকের ব্যবস্থা করে ভারতীয়দের মনোভাব জানার চেষ্টা করেন। গোলটেবিল বৈঠকের ফলাফল ভারতীয় জনগণকে অবহিত করবার জন্য ব্রিটিশ সরকার একটি 'শ্বেতপত্র' (White paper) প্রকাশ করেন। এর শিরোনাম ছিল 'ভারতের সাংবিধানিক সংস্কারের জন্য প্রস্তাবসমূহ'। এ শ্বেতপত্রের প্রস্তাবসমূহের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং সে সম্পর্কে রিপোর্ট পেশ করার জন্য ১৯৩৩ সালে একটি যুক্ত নির্বাচন কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি দেশীয় রাজ্যগুলো থেকে ৭ জন এবং ব্রিটিশ ভারত থেকে ২১ জন প্রতিনিধিকে ইংল্যান্ডে আমন্ত্রণ জানান এবং তাদের পরামর্শ গ্রহণ করেন। দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার পর যুক্ত নির্বাচন কমিটি ১৯৩৪ সালের ২২ নভেম্বর একটি রিপোর্ট পেশ করে। যুক্ত নির্বাচন কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে ভারত সচিব স্যামুয়েল হোর (Sir Samuel Houre) একটি বিল আকারে ১৯৩৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ব্রিটেনের আইনসভার নিম্নকক্ষ কমন্স সভায় উত্থাপন করেন। অতঃপর ৪ জুন কমন্স সভায় এবং ২৪ জুলাই আইন সভায় উচ্চ কক্ষ লর্ড সভায় 'ভারত শাসন আইন' পাশ হয়। ১৯৩৫ সালের ২ আগস্ট বিলটি রাজকীয় অনুমোদন লাভ করে, যা ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন নামে পরিচিত।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ