- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
ব্রিটিশ ভারতে প্রতিনিধিত্বশীল
লাহোর প্রস্তাবের প্রেক্ষাপট
১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের অধীনে ১৯৩৭ সালে প্রাদেশিক আইনসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে কংগ্রেসের বিপুল বিজয় ঘটে এবং মুসলিম লীগ পরাজিত হয়। এ কারণে কংগ্রেস কর্তৃক মুসলমানদের স্বার্থ উপেক্ষিত হতে দেখা যায়। মুসলিম লীগ ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন অনুযায়ী জারিকৃত নির্দেশনামা অনুসারে কংগ্রেসের নিকট যৌথ মন্ত্রিসভা গঠনের প্রস্তাব রাখেন। কিন্তু কংগ্রেস মুসলিম লীগের এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। কংগ্রেস মুসলিম লীগের সঙ্গে কোনো প্রকার আলাপ-আলোচনা ছাড়াই ৭টি প্রদেশে মন্ত্রিসভা গঠন করে। কেবল বাংলা ও পাঞ্জাবে মুসলিম লীগ যৌথ মন্ত্রিসভা গঠন করে। কংগ্রেস মন্ত্রিসভাগুলোতে মুসলিম স্বার্থবিরোধী নানাবিধ কার্যকলাপের কারণে মুসলিম অসন্তোষ বৃদ্ধি পায়। এসব কার্যকলাপের মধ্যে কংগ্রেস শাসিত প্রদেশগুলোতে চাকরির ক্ষেত্রে মুসলমানদের ন্যায্য অধিকার হতে বঞ্চিত করা হয়।
এছাড়া কংগ্রেস শাসিত প্রদেশগুলোতে অফিস-আদালত ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কংগ্রেসী পতাকা উত্তোলনের ব্যবস্থা করা। এতে মুসলমানদের মধ্যে এ ধারণা জন্ম নেয় যে, কংগ্রেস একটি হিন্দু সংগঠন এবং এ সংগঠন ভারতে একটি হিন্দু রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এ সময় ভারতের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা দেখা দেয়।
১৯৩৭ সালের নির্বাচনের পর কংগ্রেসের সভাপতি পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু ঘোষণা করেন যে, ভারত উপমহাদেশে কেবল দুটি দলের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়- একটি হচ্ছে কংগ্রেস অপরটি হচ্ছে ব্রিটিশ সরকার এবং অপরাপর সকল দলই কংগ্রেসের 'অন্তর্ভুক্ত। পণ্ডিত নেহেরুর এ ঘোষণায় মুসলমানগণ অত্যন্ত ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত হন। এমতাবস্থায় মুসলিম লীগের নেতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষণা করেন যে, "না, ভারতে তৃতীয় আরও একটি দল আছে। এটি মুসলিম লীগ এবং তা মুসলমানদের দল।" তিনি ১৯৩৫ সালের যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থাকে চিরদিনের জন্য গ্রহণের অযোগ্য বলে ঘোষণা করেন এবং বলেন, "এমন এক শাসনব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে যার ফলে মুসলমানগণ স্বীয় সংস্কৃতি ও জীবনধারাকে অব্যাহত রেখে ভারতবর্ষের বুকে মর্যাদার সাথে বসবাস করতে সক্ষম হবেন।" এর ফলে স্বতন্ত্র জাতি হিসেবে স্বাধীন আবাসভূমি স্থাপনের চিন্তাধারা শুরু হয়। উল্লেখ্য ভারত উপমহাদেশে একটি স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার ইচ্ছা বহু পূর্বেই আল্লামা ইকবাল (১৯৩০), চৌধুরী রহমত আলী (১৯৩৩) প্রমুখ ব্যক্তি পোষণ করেছিলেন। ভারত উপমহাদেশে যখন হিন্দু ও মুসলিম তিক্ত সম্পর্ক তৈরি হয় তখন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ তাঁর দ্বি-জাতি তত্ত্ব (Two-Nations Theory) উত্থাপন করেন। ১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ লাহোরে অনুষ্ঠিত মুসলিম লীগের অধিবেশনে জিন্নাহর দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে লাহোর প্রস্তাব গৃহীত হয়।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ