- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
ব্রিটিশ ভারতে প্রতিনিধিত্বশীল
১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীনতা আইনের বৈশিষ্ট্যসমূহ
১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীনতা আইনের বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নে আলোচনা করা হলো:
১. দুটি ডোমিনিয়ন সৃষ্টি: এ আইন ভারতকে বিভক্ত করে ভারত ইউনিয়ন এবং পাকিস্তান নামে দুটি নতুন ডোমিনিয়ন সৃষ্টি করে। এ আইন দ্বারা ডোমিনিয়ন দুটি কার্যত স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
২. ডোমিনিয়নের সীমানা নির্ধারণ এ আইন অনুসারে পাকিস্তান ডোমিনিয়নের আন্তর্ভুক্ত থাকবে সিন্ধু, বেলুচিস্তান, পশ্চিম পাঞ্জাব, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, পূর্ব বাংলা ও আসামের সিলেট জেলা এবং ভারত ডোমিনিয়নের অন্তর্ভুক্ত থাকবে মুম্বাই, মাদ্রাজ, উত্তর-প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, বিহার, পূর্ব পাঞ্জাব, পশ্চিম বাংলা এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জেলাগুলো ছাড়া আসাম, দিল্লি, আজমীর, মারওয়ার ও কুর্গ।
৩. গণপরিষদ গঠন: এ আইনে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য দুটি পৃথক গণপরিষদ গঠনের কথা বলা হয়। প্রত্যেক গণপরিষদ নিজ নিজ রাষ্ট্রের সংবিধান রচনা করবে। সংবিধান রচিত না হওয়া পর্যন্ত গণপরিষদ দুটি নিজ নিজ রাষ্ট্রের আইনসভা হিসেবেও কাজ করবে।
৪. দেশীয় রাজ্যগুলোর স্বাধীনতা ১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীনতা আইনের দ্বারা দেশীয় রাজ্যগুলোর ওপর ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্টের পর থেকে ব্রিটিশ প্রাধান্য ও সার্বভৌমত্বের অবসান ঘটবে। এর মাধ্যমে দেশীয় রাজ্যগুলোর সাথে সম্পাদিত সকল চুক্তি এবং সন্ধি বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়। এ আইনে দেশীয় রাজ্যগুলো নিজেদের ইচ্ছেমতো ভারত বা পাকিস্তানে যোগদান করতে পারবে অথবা স্বাধীনভাবে থাকতে পারবে।
৫. কমনওয়েলথে থাকা না থাকা এ আইনে ভারত ও পাকিস্তান ব্রিটিশ কমনওয়েলথভুক্ত দেশ হিসেবে থাকবে কি না. সে সম্পর্কে উভয় দেশের গণপরিষদকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা প্রদান করা হয়।
৬. ভারত সম্রাট উপাধির বিলুপ্তি: এ আইনের মাধ্যমে রাজকীয় মর্যাদা ও পদ থেকে 'ভারত সম্রাট' উপাধি বিলুপ্ত করা হয়।
৭. ভারত সচিব পদের বিলুপ্তি এ আইনের দ্বারা ভারত সচিব পদের বিলুপ্তি ঘটে এবং ব্রিটিশ কমনওয়েলথ সচিবকে ভারত ও পাকিস্তানের সাথে যোগাযোগ রাখার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়।
৮. সরকারি কর্মচারীদের চাকরি সংক্রান্ত এ আইন দ্বারা ভারত সচিব কর্তৃক নিযুক্ত সকল কর্মচারীদের তাদের ইচ্ছানুযায়ী যেকোনো ডোমিনিয়নে যোগদানের সুযোগ দেওয়া হয় এবং পূর্বের ন্যায় সকল সুযোগ-সুবিধা বহাল রাখা হয়।
৯. ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের সংশোধন: ডোমিনিয়নদ্বয়ের গণপরিষদ কর্তৃক নতুন সংবিধান রচিত না হওয়া পর্যন্ত উভয় ডোমিনিয়নের শাসনব্যবস্থা ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের নিম্নলিখিত সংশোধন ও পরিবর্তন সাপেক্ষে শাসিত হবে:
(ক) গভর্নর জেনারেল নিয়োগ: ভারত ও পাকিস্তানের মন্ত্রিসভার পরামর্শক্রমে ব্রিটেনের রাজা বা রানি উভয় দেশের জন্য একজন করে গভর্নর জেনারেল নিয়োগ করবেন।
(খ) মন্ত্রিসভার পরামর্শ অনুযায়ী গভর্নর জেনারেল প্রাদেশিক গভর্নর নিযুক্ত করবেন।
(গ) গভর্নর জেনারেল ও গভর্নরের ক্ষমতা হ্রাস এ আইনের দ্বারা গভর্নর জেনারেল ও গভর্নরের 'স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা', 'ব্যক্তিগত বিচারবুদ্ধি সংক্রান্ত ক্ষমতা' ও 'বিশেষ ক্ষমতা' বিলুপ্ত হবে। তারা হবেন নিয়মতান্ত্রিক প্রধান মাত্র। আইন সভার নিকট দায়িত্বশীল মন্ত্রিসভার পরামর্শ অনুযায়ী তারা শাসন কার্য পরিচালনা করবেন।
(ঘ) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ক্ষমতা হ্রাস এ আইনের মাধ্যমে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের প্রাধান্য ও ক্ষমতা হ্রাস পায়। বলা হয়, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইনের সাথে কোনো ডোমিনিয়নের আইনের অসামঞ্জস্যতা হলে সে ডোমিনিয়নের আইনসভা কর্তৃক প্রণীত আইন বাতিল বা অকার্যকর হবে না।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ