• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • অষ্টম শ্রেণি
  • ভাব-সম্প্রসারণ
ভাব-সম্প্রসারণ

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

ভাব-সম্প্রসারণ

দাও ফিরে সে অরণ্য, লও এ নগর

দাও ফিরে সে অরণ্য, লও এ নগর

ভাব-সম্প্রসারণ: বিলাসী নগরজীবন যখন নানা কারণে দুর্বিষহ হয়ে ওঠে, তখন সচেতন মনে ধ্বনিত হয় 'দাও ফিরে সে অরণ্য, লও এ নগর।' এখানে 'অরণ্য' বলতে প্রকৃতিনির্ভর জীবন বা natural life আর 'নগর' বলতে কৃত্রিম জীবন বা artificial life-কে বোঝানো হয়েছে।

প্রকৃতির সবকিছু পরস্পর বন্ধনে আবদ্ধ এবং পরস্পর নির্ভরশীল। গাছপালা, লতাগুল্ম একান্ত আপনার মতো' মায়া-মমতায় জড়িয়ে থাকে। এর পাশে থাকে পাহাড়-ঝরনা-নদী-সমতলভূমি-শস্যভূমি। স্নিগ্ধ-প্রশান্ত-পবিত্রতার স্পর্শ সর্বত্র। সর্বত্র প্রাণের বিস্তার, স্বতঃস্ফূর্ততার প্রবাহ। এই প্রকৃতির কোলে যারা বাস করে তারা প্রকৃতিনির্ভর। তারা প্রকৃতির মতোই স্বচ্ছ, প্রশান্ত, উদার ও মহৎ। তাদের জীবন সহজ-সরল, কিন্তু উচ্ছল ও প্রাণবন্ত। সেখানে বিশুদ্ধ বায়ুপ্রবাহ, সতেজ শাকসবজি, আনন্দমুখর নির্মল জীবন। পাকা রাস্তাঘাট ও বিদ্যুতের ছোঁয়া পেলেও এখনও গ্রামজীবন প্রকৃতিনির্ভর।

অন্যদিকে নগর বা নাগরিক জীবনের পুরোটাই কৃত্রিম। এখানে প্রাকৃতিক পরিবেশ যেমন নেই, তেমনি প্রকৃতি-নির্ভরতাও নেই। কেননা মানুষ বন কেটে, উঁচু ভূমি কেটে, নদীকে শাসন করে নির্মাণ করে নগর। দালানকোঠা, পাকা রাস্তাঘাট, কল-কারখানার বর্জ্য, ধুলাবালি, নানা রকম শব্দে পরিপূর্ণ নগরজীবন। মায়া-মমতাহীন, স্নেহ-ভালোবাসাহীন গাছপালাহীন রুক্ষ-ধূসর পরিবেশে মানুষের জীবনও সীমাবদ্ধ, প্রাণহীন, রুক্ষ। বয়ে যাওয়া নদী-নালাও স্রোতহীন, ময়লা-আবর্জনায় বুদ্ধ দুর্গন্ধময়। এখানে বিশুদ্ধ বাতাসের অভাব, সতেজ খাবারের অভাব, প্রাণোচ্ছল জীবনের অভাব। সবকিছু দূষিত, কৃত্রিমতায় ভরা। এসব দমবন্ধ করা পরিবেশে মানুষ হাঁপিয়ে উঠেছে। তারা সজীব, শ্যামল, প্রাণবন্ত প্রাকৃতিক জীবন চায়-অরণ্যের প্রশান্ত কোল প্রার্থনা করে। উদার, স্বচ্ছন্দ, জীবন্ত পরিবেশে প্রাণভরে শ্বাস নিতে চায়। তাজা গাছপালা, তাজা বর্ণময় ফুল দেখতে চায়। তাজা ফল, তাজা খাবার খেতে চায়। সর্বোপরি নির্মল ও প্রাণোচ্ছল জীবন-যাপন -যাপন করতে চায়। বোপরি তাই তো মানুষ সচেতন ও স্বতঃস্ফূর্তভাবেই উচ্চারণ করে-দাও ফিরে সে অরণ্য, লও এ নগর।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ