- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- অষ্টম শ্রেণি
- ভাব-সম্প্রসারণ
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
ভাব-সম্প্রসারণ
যে সহে, সে রহে
যে সহে, সে রহে
ভাব-সম্প্রসারণ: বৈরী শক্তির সাথে যুদ্ধে আঘাত পেয়েও যে সহ্য করে সেই চূড়ান্ত জয়লাভ করে। প্রকৃতিবিজ্ঞানী ডারউইনের 'Survival of the fittest' তত্ত্ব পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, মানুষ তথা জীবজগৎকে নিরন্তর ঝড়-ঝঞ্ঝা, ভূমিকম্প প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্য দিয়ে বহু ত্যাগ-তিতিক্ষার পর নানাবিধ প্রতিকূল অবস্থার সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকতে হয়েছে।
অনেক কষ্ট করে ক্ষুধার অন্ন জোগাড় করতে হয়েছে, বন্য হিংস্র প্রাণীর হাত থেকে আত্মরক্ষা করতে হয়েছে। দীর্ঘকালের জীবনসংগ্রামে মানবজাতির অনেক শাখা পৃথিবীর বুক থেকে বিলুপ্ত হয়েছে। যারা টিকে আছে, একমাত্র সহনশীলতার মাধ্যমে যোগ্যতা অর্জনের জন্যই তারা পৃথিবীতে টিকে আছে। বিভিন্ন আঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে মানুষ কেবল অধ্যবসায় দ্বারাই প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। অনেক ত্যাগ, অনেক সংগ্রামের পরই মানুষের আজকের অবস্থান। অতীতে আজকের সভ্য মানুষ ছিল গুহাবাসী, পরিধান করত গাছের পাতা, বাকল, খেত কাঁচা মাংস। একে একে আবিষ্কার করেছে তারা আগুন, পরিধান করেছে বস্ত্র, আবিষ্কার করেছে আজকের সভ্য সমাজ। আজ যে সুসভ্য মানুষ টিকে আছে এটা একমাত্র সহনশীলতার ফলেই সম্ভবপর হয়েছে।
অসহিষ্ণুতার মাধ্যমে মানবজীবনে কোনো সাফল্য লাভই সম্ভব নয়। এর ফলে মানুষ হয়ে পড়ে হতাশাগ্রস্ত। যারা নিয়তির ওপর ভরসা করে জীবনযাত্রা অতিবাহিত করতে চায়, তারা পৃথিবীতে কখনো ভালো কোনো অবদান, কিংবা ভালো কিছু সৃষ্টি করতে পারে না। তার নিজের অবস্থানকে সুদৃঢ় করতে পারে না। এখানে দুর্বলের কোনো স্থান নেই। জগৎসংসারে দুর্বল সর্বদাই প্রবল পরাক্রমের কাছে পরাজিত হয়। তাই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে সংগ্রামে লিপ্ত হতে হবে, ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে নানা ঘাত-প্রতিঘাতকে। তাইতো কথায় আছে, "একবার না পারিলে দেখ শতবার"। ধৈর্যের সাথে বারবার চেষ্টার মাধ্যমে সফলতা একদিন আসবেই। কারণ সবুরে মেওয়া ফলে। মানুষ তার ভাগ্যের স্রষ্টা। বস্তুতপক্ষে এ সংসারে যার ঘাত-প্রতিঘাতের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার যোগ্যতা আছে তারই বেঁচে থাকার অধিকার আছে। ধৈর্যের সঙ্গে বৈরী পরিবেশ-পরিস্থিতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে আঘাত সহ্য করে প্রতিঘাত দিয়ে টিকে থাকার মধ্যেই সার্থকতা।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ

