• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • অষ্টম শ্রেণি
  • ভাব-সম্প্রসারণ
ভাব-সম্প্রসারণ

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

ভাব-সম্প্রসারণ

কোথায় স্বর্গ, কোথায় নরক? কে বলে তা বহুদূর, মানুষের মাঝে স্বর্গ-নরক মানুষেতে সুরাসুর

কোথায় স্বর্গ, কোথায় নরক? কে বলে তা বহুদূর,
মানুষের মাঝে স্বর্গ-নরক মানুষেতে সুরাসুর

ভাব-সম্প্রসারণ: মানুষকে ভালোবাসলে পৃথিবীতেই স্বর্গসুখ অনুভব করা যায়। আদিকাল থেকে স্বর্গ-নরকের কল্পিত অস্তিত্ব নিয়ে আমাদের কৌতূহলেরও শেষ নেই। অপার্থিব জগতে স্বর্গ ও নরক দুই-ই বিপরীতধর্মী স্থান। সব ধর্মেই স্বর্গকে এক অপূর্ব সুষমামণ্ডিত স্থানরূপে গণ্য করা হয়েছে। কেবল পুণ্যাত্মাগণই সেখানে প্রবেশের অধিকার পাবেন। আর যারা দুরাত্মা, যারা পাপাচারী তারা নিক্ষিপ্ত হবে নরকের ভয়ংকর অগ্নিকুণ্ডলীর মাঝে। মানুষের এ প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি কবি অনুরক্ত নন। কবি মনে করেন স্বর্গ এবং নরক পারলৌকিক কোনো বস্তু নয়। এ পৃথিবীতেই স্বর্গ এবং নরক বর্তমান। স্নেহ, প্রেম, পারস্পরিক সৌহার্দ্য এবং সম্প্রীতির বন্ধনে এ ধুলোমাখা মাটির পৃথিবী স্বর্গ হয়ে উঠতে পারে। স্বর্গ ও নরক মানুষের হৃদয়ের অভ্যন্তরেই ব্যাপ্ত থাকে। যে ব্যক্তি সৎচিন্তা ও সৎকর্ম করেন, সেই ব্যক্তি এ দুনিয়াতেই এক মহাপ্রশান্তি লাভ করেন। অন্যদিকে কুচিন্তাশীল মন, কুকর্মকারী মানুষ অহর্নিশ নরকরূপ গ্লানিতে দাহ্য হতে থাকে। সৎচিন্তা ও সৎকর্মের একটি পূত-পবিত্র নির্মল আনন্দ রয়েছে। তা স্বর্গসুখ অপেক্ষা কম সুখদায়ক নয়। তদ্রূপ পাপেরও একটি নিদারুণ ধিক্কার ও গ্লানি আছে। মানুষ সৎ ব্যক্তির সাহচর্যে নির্মল আনন্দ অনুভব করে। এরূপ সঙ্গ মানুষ ত্যাগ করতে চায় না। পক্ষান্তরে পাপীর সাহচর্য মানুষ পেতে চায় না, সেখানে সবাই যেন দুর্গন্ধময় গ্লানি অনুভব করে। সুতরাং বোঝা যায়, এ দুনিয়াতেই মানুষের হৃদয় অভ্যন্তরে স্বর্গসুখ ও নরকজ্বালা উভয়ই বিরাজ করে। তা খোঁজার জন্য আমাদের বহুদূরে কোথাও ছুটতে হবে না। সুন্দর এ পৃথিবীতে নিজেকে প্রতিবন্ধনে জড়াতে পারলেই স্বর্গের সুখ অনুভব করা যায়। মানুষকে ভালোবাসা আমাদের সবার দায়িত্ব। যদি আমরা মানুষকে সম্মান দিই, তাহলে গৌরবময় জাতি হিসেবে আমরা পৃথিবীতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ