- হোম
- স্কুল ১-১২
- সাধারণ
- অষ্টম শ্রেণি
প্রবন্ধ রচনা
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
প্রবন্ধ রচনা
টেলিভিশন অথবা, জনমত গঠনে টেলিভিশন
ভূমিকা: গণমাধ্যমগুলোর মধ্যে সর্বাধিক জনপ্রিয়তায় অভিষিক্ত হয়েছে টেলিভিশন। দূরমাধ্যম শিক্ষার সার্থক বাহন এটি। যুগপৎ শ্রবণ ও দর্শনেন্দ্রিয়ের, পরিতৃপ্তি ঘটে টেলিভিশনে। তাই এর কার্যকারিতা অনন্য সাধারণ।
টেলিভিশন আবিষ্কার টেলিভিশন আধুনিক বিজ্ঞানের এক বিস্ময়কর আবিষ্কার। ১৯২৬ সালে এটি আবিষ্কার করেন ইংরেজ বিজ্ঞানী জন বেয়ার্ড। ১৯৩৬ সালে সর্বপ্রথম সফলভাবে টেলিভিশন চালু হয় ইংল্যান্ডে। তখন টেলিভিশনের আকৃতি ও কার্যক্রম অন্য রকম ছিল। ক্রমান্বয়ে এর উন্নতি সাধিত হয়। টেলিভিশন বর্তমান রূপ ধারণ করে ১৯৪৫ সালে।
জাতীয় জীবনে টেলিভিশনের গুরুত্ব: সার্থক প্রচার মাধ্যম হিসেবে টেলিভিশনের বিশেষ গুরুত্ব বিদ্যমান। আমাদের জাতীয় জীবনে টেলিভিশন যেসব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে তা নিম্নরূপ-
জনশিক্ষায় টেলিভিশন টেলিভিশনের মাধ্যমে নিরক্ষরতা দূরীকরণের কর্মসূচি নেওয়া যেমন সহজ, তেমনি বিভিন্ন বিষয় আলোচনার ব্যবস্থা করা এবং নিরক্ষর জনগণকে সেসব বিষয় সম্পর্কে শিক্ষিত করে তোলা যায়। শিক্ষার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নানা অনুষ্ঠান প্রচার করে টেলিভিশন।
কৃষি উন্নয়নে টেলিভিশন: যথাসময়ে জমিতে চাষ দেওয়া, উন্নত বীজ সংগ্রহ করা, মাটির প্রকৃতি অনুসারে চারা রোপণ করা, পরিমাণমতো কীটনাশক ও সার ব্যবহার করা, সময়মতো জমিতে সেচ দেওয়া ইত্যাদি সম্পর্কে বাংলাদেশের অধিকাংশ কৃষকেরই ধারণা নেই। টেলিভিশনের মাধ্যমে নানা অনুষ্ঠান করে এ সমস্যা দূর করা যায়।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে টেলিভিশন বর্তমানে বাংলাদেশে জনসংখ্যাকে সরকারিভাবে প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ভয়াবহ রূপ এবং জন্মনিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান প্রচার করে টেলিভিশনের মাধ্যমে এ সমস্যা যথেষ্ট পরিমাণে কমিয়ে আনা সম্ভব।
খেলাধুলায় টেলিভিশন: আজ বিশ্বের বহুদেশে নানা ধরনের খেলা হচ্ছে; যেমন- বিশ্বকাপ ফুটবল, বিশ্বকাপ ক্রিকেট, অলিম্পিক গেমস, হকি, টেনিস ইত্যাদি খেলা। টেলিভিশনের মাধ্যমে এসব খেলা দেখে ব্যক্তিজীবনে শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতার প্রভাব পড়লে তার প্রতিফলন জাতীয় জীবনেও ঘটতে পারে।
বিনোদন হিসেবে টেলিভিশন: বিনোদন জীবনের একটি অংশ। জীবিকা নির্বাহের প্রয়োজনে মানুষ সারাদিন পরিশ্রম করে। মনের প্রফুল্লতার জন্য এ সময়ে তার একটু বিনোদন প্রয়োজন। এতে মানুষের কর্মক্লান্ত জীবনে প্রশান্তি আসে। আর এ প্রশান্তি আসতে পারে টেলিভিশনের মাধ্যমে।
জনমত গঠনে টেলিভিশন: গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় জনমতের গুরুত্ব সর্বাধিক। সচেতন জনমত গণতন্ত্রের সাফল্যের প্রধান চাবিকাঠি। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনমত সরকারের নীতি ও কার্যকলাপের ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিস্তার করে থাকে। বিশ্বে গণতান্ত্রিক কাঠামোর প্রসার যত বাড়ছে, জনমতও তত গুরুত্ব লাভ করছে। গঠনমূলক আলোচনা ও সুপরিকল্পিত অনুষ্ঠান প্রচারের মাধ্যমে জনমত সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে টেলিভিশন।
উপসংহার: বর্তমান যুগে টেলিভিশন একটি গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যম। সরকারি টেলিভিশন ছাড়াও বর্তমানে বেসরকারি উদ্যোগে বেশ কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল চালু হয়েছে। টেলিভিশনের অবদানকে জাতির কাজে লাগাতে চাইলে জনগণের কাছে সহজলভ্য করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, সরকারি কর্মক্ষেত্র ইত্যাদির জন্য বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে টেলিভিশন পাওয়ার যে ব্যবস্থা রয়েছে, তা আরও সম্প্রসারিত করতে হবে।